রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের ভীমনগর ঐতিহ্যবাহী বারুনীর মেলা কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে। ঐতিহ্য কিঞ্চিৎ পরিমাণ ধরে রাখতে বারুনী তিথিতে পূজা, গঙ্গা স্নান ও পরদিন কীর্তনের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। আয়োজক কমিটির সভাপতি সনজিত ঠাকুর জানান, সাধক রায়চরন এ পূজার আয়োজন করেন। এখানে পূজান্তে ৭দিন ব্যাপী মেলা চলতো। দূর দূরান্ত হতে হাজার মানুষের সমাগম ঘটতো। তার মৃত্যুর পর যথা নিয়মে ডান হাতের আঙ্গুল কেটে সমাহিত করা হয়। পরে মনোহর ঠাকুর অনুষ্ঠানমালা পালন করে আসছিল। এর পরবর্তীতে মনোহর ঠাকুরের ছেলে দীজেন ঠাকুর পরিচালনা করছে। পূজার পুরোহিত মোহন চক্রবর্তী জানান, ১২ বছর বয়সে ব্রাম্মণের পৈতা নেওয়ার পর হতে আমি পূজা করছি। আজ আমার বয়স ৬৯ বছর । আমার পিতা বীরেন্দ্র নাত ঠাকুর সারা জীবন এখানে পূজা করেছে।
কথিত রয়েছে, শ্রী পদ্মলোচন বা হরি ঠাকুরের দর্শন নিরাকারে সাধন ভজন। হরি ঠাকুর ওছিয়ত করেন যে আমি মারা গেলে, আমার মরদেদহ দাহ করিওনা। সমাহিত করার উপদেশ দেন।
মাঘি পূর্ণিমা তিথিতে দেহ রক্ষা করেন। তিনি যথন দেহ রাখেন তখন তাঁর পরিবার পরিজন ব্রাহ্মণ সমাজের চাপে শব দাহ করার আয়োজনে বাধ্য হয় এবং বাবার কথা রক্ষার্থে পুত্রেরা হরি ঠাকুরের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল কেটে রেখে সমাহিত করেন।
পদ্মলোচন বা হরি ঠাকুরের শবদাহ করনার্থে জামালপুর চন্দনা নদীর তীরে শ্মশান ঘাটে (বর্তমান বাজারের কালী মন্দির স্থানে) চিতায় শব দাহ করনে সাজানো হয়। হিন্দু রীতি মোতাবেক মুখাগ্নী করতে গেলে শবটি চিতা থেকে নদীতে পরে যায়। ভীমনগর গ্রামের রায়চরন বিশ্বাস পেশা মাছ ধরা- বিক্রয় করা এদের আঞ্চলিক ভাষায় জেলে বলে। সে হরি ঠাকুরের বিশ্বস্ত শিষ্য- তার বাড়িতে হরি ঠাকুরের সাক্ষাৎ হয়। সেই সময় থেকে বারুনীর স্নানে উক্ত রায় চরনের বাড়িতে মেলা হয়। উহা ভীমনগরের জেলের মেলা নামে পরিচিত।পদ্মলোচন বা হরি ঠাকুরের বংশাবলীর কুষ্ঠি পর্যালোচনা করে জানা যায় উক্ত পরিবারে শ্রী নিত্যানন্দ ঠাকুর পর্যন্ত সবাই মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে দেহ রাখিয়াছেন।