রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভেজাল সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ভেজাল সার প্রয়োগের ফলে কৃষক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিবুল হাসান, উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বাজার পরিদর্শনে গেলে তথ্যের সত্যতা পান। ভেজাল সার বিক্রির অপরাধে সমাধিনগর বাজারের বিশ্বাস ট্রেডার্স এর মালিক রিপন বিশ্বাসকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ভেজাল সার গুলো ধ্বংস করেন। এ খবর পেয়ে অন্য ব্যবসায়িরা পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে প্যাকেট জাত দস্তা, সালফার, জিপসাম সহ নানাধরনের কথিত রাসায়নিক সার বিক্রি করছে প্রতারক চক্র। খুচরা সার বিক্রেতারা দামে কম পেয়ে সহজেই গ্রহন করছে। কৃষক দোকানদারদের উপর নির্ভরশীল হয়ে কমদামে পেয়ে সাদরে কিনে নিয়ে জমিতে প্রয়োগ করে অস্বাভাবিক ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে। সম্প্রতি ভ্রাম্যমান আদালতে একটি ভেজাল সার কারখানা ধ্বংস করলেও অন্যরা তাদের কার্যক্রম অন্যরা তাদের কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে।
জঙ্গল গ্রামের কৃষক প্রেম কুমার বিশ্বাস জানায়, এ বছর ২ একর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছে। জমি কর্ষনের সময় টি এস পি , পটাশ ও জিপসাম প্রয়োগ করেছিল। বীজতলা হতে সুন্দর চারা জমিতে লাগিয়ে সেচ দেওয়ার পর অধিকাংশ চারা পচে নষ্ট হচ্ছে। এ মৌসূমে তার অপূরণীয় ক্ষতি হবে। ভেজাল সার উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের শাস্তির দাবী করে।
বন্যতৈল গ্রামের পেঁয়াজ চাষী প্রতাপ শিকদার জানায়, তার নিজস্ব কোন জমি নেই, অন্যের জমি বর্গা(ফসলী ভাগ) ও খাজনা( টাকার বিনিময়ে বাৎসরিক জমি ভোগ ) করে ৩একর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছে। জমি কর্ষনে কোন ঘাটতি রাখেনি। উন্নতমানের চারা জমিতে লাগানোর পর মাটিই ধরছে না। ঐ জমিতে পুনরায় অন্য ফসলের আবাদ করতে হবে। তার ঘারে বড় ধরনের ঋণের বোঝা চেপে যাবে। যা কোন ক্রমেই পরিশোধ হবার যোগ্য নয়। মঙ্গলবার বিকেলে কৃষি কর্মকর্তা জঙ্গল বাজারে এসে কথিত ভেজাল সার নষ্ট করাতে বুঝতে পারল ঐজাতীয় সার প্রয়োগের কারণেই তার এত বড় ক্ষতি হয়েছে।
পুরান ঘুরঘুরিয়া গ্রামের হরিচাঁদ দেউরী, অশোক মন্ডল জানায়, বর্তমানে দোকান হতে সার ওষুধ কিনে জমিতে প্রয়োগ করার পর কোন কাজে আসছে না। প্রতারকদের বিরুদ্ধে জেল হাজতের দাবী করে।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কৃষককে সচেতন হতে হবে। প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং চলছে। যে কোন প্রকারের ভেজাল সার , কীটনাশক পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।