অসময়ে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি। নদীতে রয়েছে প্রচন্ড স্রোত। স্রোত থাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায়। ভাঙন আতংকে রয়েছে দৌলতদিয়া পারের প্রায় ২শতাধিক ব্যবসায়ী ও ২শতাধিক পরিবার। দৌলতদিয়া ৫নং ফেরি ঘাটের আংশিক অংশ নদী গর্ভে চয়ে যায়। ভাঙনরোধে সকাল থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ দৌলতদিয়া পারের ৫নং ফেরি ঘাটের কিছু অংশ নদী গর্ভে চলে যায়। জরুরী ভাবে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নিজস্ব রেকার দিয়ে পল্টুনটি সরিয়ে নেওয়া হয়। যে কারণে সাময়িক ভাবে দৌলতদিয়া পারের ৫নং ফেরি ঘাট বন্ধ রাখেন কর্তৃপক্ষ।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এবং ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ যাবৎ পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে দৌলতদিয়া নদীর পারে লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকায় রয়েছে প্রচন্ড স্রোত । ৫নং ফেরি ঘাটের কিছু অংশ নদী ভাঙনের কারণে অনেকে রয়েছে আতংকে। অনেকে নদীর পার দিয়ে দোকান গুলো অন্য জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে।
এসময় মো. খবির মোল্লা নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রতি বছর পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়। ভাঙন শুরু হলে কিছু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে গুরু দায়িত্ব পালন করে। কিন্ত এই ভাবে নদীতে ভাঙতে ভাঙতে আবাদি ও বসতি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রহহীন হচ্ছে শতশত পরিবার। তিনি বলেন, বর্ষার পূর্বে যদি নদীর পার দিয়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানো হতো তাহলে এসময় নদীতে ভাঙনের কবলে পরতে হতো না।
দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকার চাঁন মিয়া নামের এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে নদী ভাঙন রোধ করতে পারে। কিন্ত দেখা যায়, সারা বছর কারো কোন খোঁজ নেই। নদী ভাঙন শুরু হলে জরুরী ভাবে কিছু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে দায়িত্ব পালন করে। তিনি আরোও বলেন, যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে এতে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এবং শতশত বসতি পরিবার আতংকে রয়েছে। যে কোন সময় নদী গর্ভে চলে যেতে পারে। নদী পারের অসহায় মানুষের রক্ষা করতে হলে অবশ্যই ভাঙন রোধ করতে হবে।
ইব্রাহিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, দিন দিন দৌলতদিয়া ঘাটের মানচিত্র নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। প্রতিবছর বসতি-আবাদি জমি যাচ্ছে নদীতে। ভূমিহীন হচ্ছে শতশত পরিবার। কিন্ত সময় মত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করছে না। ভাঙন শুরু হলে ব্যস্ততা দেখা যায়। আর জনপ্রতিনিধিরা শুধু দিনের পর দিন আশ্বাস দিয়ে সময় পার করছে।
দৌলতদিয়া ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য উজ্জল হোসেন বাবু জানান, ৩বার নদী ভাঙনের কারণে আমার নিজস্ব বাড়ী ভাঙতে হয়েছে। এখন এক ঘনিষ্ট আত্নীয়ের বাড়ীতে বসবাস করতে হচ্ছে। আমি শুধু ভূমিহীন নয় গ্রহহীন হয়ে পরেছি। আমার মত শতশত পরিবার গৃহহীন হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহ্ আলম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে নদীতে প্রচন্ড স্রোত রয়েছে। এই স্রোত কারণে ৫নং ফেরি ঘাটের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। এখানে কিছু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর হচ্ছে। দিলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব।