সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও সনাকের যৌথ উদ্যোগে তথ্য অধিকার দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩২ Time View

‘‘ডিজিটাল যুগে পরিবেশসংক্রান্ত তথ্যে অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণ’’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) রাজবাড়ীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালী, আলোচনা সভা এবং সনদপত্র বিতরন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল ৯ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র‌্যালী রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শংকর চন্দ্র বৈদ্য’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। টিআইবি সনাক কর্তৃক রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত ৬৭ টি সরকারী দপ্তর সমূহের উপর পরিচালিত একটি ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ। সনাক সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন এর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবু রাসেল, সনাক সভাপতি প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব উল হক, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হাবিবুর রহমান, জেলা তথ্য কর্মকর্তা রেখা ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ের সকল অফিস প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিআইবি এবং সনাকের তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রচার এবং বাস্তবায়নে সহায়তার কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরুপ একটি সনদপত্র জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার সনাক সভাপতি প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান এবং টিআইবি এর এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ এর হাতে তুলে দেন। এরপর টিআইবি সনাকের ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষনের ভিত্তিতে হালনাগাদ থাকা ১৯টি জেলা পর্যায়ের সরকারি দপ্তরকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সনদপত্র দপ্তর প্রধানদের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার।

টিআইবির পক্ষ যেসকল থেকে আহ্বান জানানো হয়- টিআইবি সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নি ক্ত সুপারিশমালা প্রস্তাব করছে।

তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুসারে অনতিবিলম্বে স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় যোগ্য ও কোনো প্রকার প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিদের প্রধান তথ্য কমিশনারসহ অন্যান্য তথ্য কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটানো এবং সার্বিকভাবে তথ্য কমিশনকে সংস্থাটিকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে। সরকারের নিকট ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত অংশীজনদের মতমতের ভিত্তিতে তথ্য অধিকার আইনটির প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধারার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে আইনটিকে যুগোপোযোগী করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে তথ্য অধিকার আইনের আওতাভুক্ত করতে হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের আয়-ব্যয়ের বিভিন্ন খাতয়ারি খরচ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে সেসব তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে যথাসময়ে প্রকাশ করবে। বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতের অধিকার নিশ্চিতের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এক্ষেত্রে সকল আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট জনগণের ওপর যে কোনো ধরনের ডিজিটাল নজরদারী কাঠামো বিলুপ্ত করতে হবে।তথ্যপ্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার সহজলভ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। অফিসিয়াল সিক্রেটস এ্যাক্ট ১৯২৩ সহ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯Ñ এর সাথে সাংঘর্ষিক বিদ্যমান আইনি বিধান সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করতে হবে। নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও আধাসরকারিসহ সকল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে যথাযথ ধারণা ও তথ্য প্রদানে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং তথ্য প্রদানে আগ্রহ সৃষ্টির কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ, জনগণ ও গণমাধ্যমের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ এবং তথ্য প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ প্রান্তিক পর্যায়ের সকল নাগরিককে তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহারে সচেতনতা ও সক্ষমতা সৃষ্টির বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আইনানুগ স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচার বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথ্য কমিশন এবং সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সকল সংস্থার নিজস্ব ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তথ্যপ্রকাশ ও প্রচারে প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা ও সক্ষমতা পর্যবেক্ষণের জন্য তথ্য কমিশনের ক্ষমতা ও তদারকি বাড়ানোসহ তদারকি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ ও জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। তথ্য অধিকার নিশ্চিতে গণমাধ্যমকে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ, সুশীল সমাজ, তথ্য কমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ‘‘জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন, ২০১১’’ সম্পর্কে সচেতনতা এবং এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সকল সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে আরো তথ্যবহুল যেমন- নিরীক্ষা প্রতিবেদন, পূর্ণাঙ্গ বাজেট, প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ তথ্য, প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের জন্য জরিমানা ও আদায়ের পরিমাণের ওপর পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করতে হবে ও নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে। এ সকল তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে এবং ইংরেজী ও বাংলা দুই ভাষাতেই সেটা সহজলভ্য করতে হবে। সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের তথ্যে পর্যায়ক্রমে ব্রেইল পদ্ধতিতে অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto