আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলার রাখাল রাজা, আমার প্রাণের স্পন্দন, যার জন্ম না হলে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য আজো আলো বিকিরণে উচ্ছসিত হতো কিনা জানিনা, সেই মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৩০ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মায়ের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙালীর হাজার বছরের যে শ্রেষ্ঠ অর্জণ তাঁর দুঃসাহসিক ঘোষণা হয়েছিলো এই দিনে। ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক যে সিদ্ধান্তে দেশ ভাগ হয়েছিলো, তার খেশারত বাঙালীরা দিয়েছে ২৩ বছরজুড়ে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট, ৬৪’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান এবং ৭০ এর নির্বাচনসহ ২৩ বছরের দমন পীড়ন শোষণ-শাসন পেরিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বাঙালীদের উজ্জীবিত করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। মুক্তিকামী জনতার স্ফুলিঙ্গসম ঢেউকে সেদিন নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি পাকিস্তানী জান্তা। আমরাও সেদিন দেশ মাতৃকার স্বাধীকারে জীবনকে তুচ্ছ করে হাতে তুলে নিয়েছিলাম অস্ত্র। দীর্ঘ নয় মাসে রক্তগঙ্গায় সাগর ভাসিয়ে অবশেষে অর্জিত হলো মহান স্বাধীনতা। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সর্বঅঞ্চলে সবুজের বুকে লাল রক্তের ঢেউ দিয়ে পত পত উড়েছিলো বাংলার পতাকা। বাঙালীরা বুক উচু করে দির্ঘ শ্বাস নিয়ে ভঙ্গুর এক রত্তাক্ত জনপদে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার পূনর্গঠনে সেদিন শুরু হয়েছিলো পদযাত্রা। কিন্তু তা আর অগ্রসর হলো না। দেশী বিদেশী কুচক্রি মহল বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারসহ সমগ্র জাতিকে থামিয়ে দিল। জাতির অস্তিত্বকে ক্ষতবিক্ষত করে বাঙালীর মননজুড়ে বেয়নেটের আচড় পুতে দিল। আবারও সংগ্রাম। আবারও আন্দোলন। এবার শুধূ দেশ গঠনের। বঙ্গবন্ধুকে রক্তাক্ত মানচিত্র থেকে মুছতে পারবেনা ওরা কোন কিছুতেই। এই ছিল পণ। বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহ বাঙালীকে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় উজ্জীবিত করল। এ স্বúœ পূরণে তার সুযোগ্য কন্যা ও বিশ্ব মানবতার মাতা জননেত্রী শেখ হাসিনা দুঃসাহসিক অভিযানে আবির্ভূত। এমডিজি পুরণে সর্বাগ্রে আর এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা এখন হাতের নাগালে। বিশ্বের নান্দনিক কলেবরে উন্নত বাংলার দিকপাল হয়ে দুয়ার খুলেছে স্বপের পদ্মা সেতুœ। দুর্ভিক্ষগ্রাসী বাঙালী এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। বাঙালীর মাথা পিছু গড় আয় এখন ২৫৬৮ মার্কিন ডলার। জিডিপি অর্জন পশ্চিমা হায়েনা পাকিস্তান থেকে বহগুণে এগিয়ে। এই সবকিছুই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণের অঙ্গিকার। বাঙালী জাতি হিসেবে এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্বের ভারে আমিও একজন কর্মী। এদেশ গঠনে মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় সার্বক্ষণিক সকল সরকারী সিদ্ধান্তে ও বঙ্গবন্ধু কন্যার দুর্নীতি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির সাথে আমি একাকার। আসুন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নিদের্শনার সাথে দেশ গঠনে দীপ্ততা নিয়ে এগিয়ে যাই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গ বন্ধু।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার
প্রকাশক
দৈনিক আমাদের রাজবাড়ী ।