পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যুদ্ধ পরিকল্পনা অপারেশন সার্চ লাইট ২৫ মার্চ রাতে যশোর সেনানিবাস থেকে ২৭ বালুট রেজিমেন্ট থেকে এক কোম্পানি সৈন্য আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা সদর কুষ্টিয়া শহরে এসে অবস্থান গ্রহণ করে। পাকবাহিনীর ত্রিশ ঘণ্টার জন্য সান্ধ্য আইন জারী করে এবং টহল দিতে থাকে। পাক সেনাদের অধিনায়ক ছিল মেজর শোয়েব। ক্যাপ্টেন শাকিল ক্যাপ্টেন সামাদ ও লেঃ আতাউল্লাহ শাহ মেজর শোয়েবের অধীনস্ত অফিসার হিসেবে এই কোম্পানির সাথে কুষ্টিয়ায় অবস্থান করছিল। পাকবাহিনীর সঙ্গে ছিল ১০৬ এমএম জীপ আরোহিত রিকয়েলেস রাইফেল, ভারী ও হালকা চাইনিজ মেশিনগান, স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, শক্তিশালী বেতারযন্ত্র এবং প্রচুর পরিমাণ গোলাবারুদ। ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনী কর্তৃক ইপিআর বাহিনীর পিলখানাস্থ সদর দপ্তর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণের খবর এবং কুষ্টিয়া পাকসেনাদের আগমনের খবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
৩০ মার্চ যশোর ক্যান্টনমেন্টের পাক সেনাবাহিনী কুষ্টিয়া শহর পুরোপুরি দখলে নিয়ে নেয়। ইপিআর এর যশোর সেক্টরের নিয়ন্ত্রণাধীন চুয়াডাঙা ৯ নং উইং এর কমান্ডার মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে শুরু হয় কুষ্টিয়া মুক্ত করার প্রক্রিয়া। বাঙালি মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ৭১’ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বদলী হয়ে চুয়াডাঙায় উইং কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার খানখানাপুরে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধঃ কুষ্টিয়ার প্রতিরোধ প্রবন্ধে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম কুষ্টিয়ার প্রথম যুুদ্ধ সম্পর্কে লিখেছেন-
‘কুষ্টিয়ার যুদ্ধ জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করে। প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র-শস্ত্র গোলাবারুদ ও যানবাহন মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে ভীতি ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে কুষ্টিয়া বিজয়ে জনগণের সাহস আত্মবিশ্বাস উদ্দীপনা আকাশচুম্বীরূপ নেয়। সুদৃঢ় মনোবলের সাথে মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের মোকাবেলা করেছে বীরত্বের সাথে। এই এলাকার সাহসী জনগণের নির্ভীক ভূমিকা যুগে যুগে জাতিকে প্রেরণা যোগাবে। ইতিহাসের পাতায় রক্তাক্ষরে লেখা থাকবে বিজয়ের সেই স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়।’
২৫ মার্চ ‘৭১ ঢাকায় রাতের অন্ধকারে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর থেকেই মুক্তিকামী বাঙালি তাদেরকে প্রতিহত করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং বঙ্গবন্ধুর সেই অমোঘ বাণী ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা’ করতে সকল ক্ষেত্রে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
রাজবাড়ীর শহীদ হাসমত ও কুদ্দুস পাকবাহিনীর হাত থেকে কুষ্টিয়া দখলমুক্ত করতে সেদিন গোয়ালন্দ মহকুমার বালিয়াকান্দি, বরাট, পাঁচুরিয়া, বেলগাছি, কালুখালি, পাংশাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মুক্তিসেনা স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। কুষ্টিয়া মুক্ত করতে সেইযুদ্ধে যে ৪জন মুক্তিযোদ্ধা আত্মহুতি দেয় তাদের মধ্যে শহীদ হাসমত ও শহীদ কুদ্দুস রাজবাড়ীর বীর সন্তান। শহীদ হাসমতের বাড়ি বর্তমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামে। পিতৃহীন অবিবাহিত হাসমত ছিল মায়ের একমাত্র সন্তান। আর শহীদ কুদ্দুসের বাড়ি কালুখালি উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। এরা দু’জনেই ছিল আনসার বাহিনীর সদস্য। আনসার কমান্ডার কালুখালির কালিকাপুরের নুরুন্নবীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়ায় গিয়ে শহীদ হাসমত ও শহীদ কুদ্দুস সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
কুষ্টিয়া শত্রুমুক্ত করতে রাজবাড়ীর তৎকালিন মহকুমা প্রশাসক শাহ মোহাম্মদ ফরিদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। ২৯মার্চ একটি বিশেষ ট্রেনযোগে রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে আনসার বাহিনীর প্রায় এক’শ সদস্য সহ বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবু ওসমান চৌধুরীর বাহিনীর সাথে অংশ নেয়। প্রচন্ড লড়াইয়ের পর পাকবাহিনী আত্মসমর্পন করে।
কুষ্টিয়ার যুদ্ধে পাকবাহিনীকে প্রতিহত করে সহযোদ্ধা শহীদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে রাজবাড়ীর যোদ্ধারা আত্মনিয়োগ করে দক্ষিণবঙ্গের দ্বারপথ গোয়ালন্দ ঘাটের প্রতিরোধ যুদ্ধে। কুষ্টিয়া মুক্ত করে রাজবাড়ীর রেল স্টেশনে পৌঁছালে ১ এপ্রিল সর্বস্তরের মানুষ তাদের বিপুল সংবর্ধনা প্রদান করে। কুষ্টিয়ার যুদ্ধে রাজবাড়ীর আনসার সদস্যদের অংশগ্রহণ প্রসংগে গোয়ালন্দ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পাকবাহিনীর বন্দী শিবিরে সাড়ে ৪ মাস শীর্ষক এক সাক্ষাৎকার ভিত্তিক প্রতিবেদনে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রামপুরের মো. খবির উদ্দিন খাঁ উল্লেখ করেছেন-
‘রাজবাড়ী আনসার ক্যাম্পে আমাদের ২৪৪ জন বাঙালির ৪২ দিনের ট্রেনিং শুরু হয়। ট্রেনিং চলাকালিন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনে আমাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রশিক্ষক পাংশার নুরুন্নবী সাহেব সহ অন্যরা আমাদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন। ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গুলি করে বাঙালি হত্যা খবর শুনে আমরা পাকবাহিনীকে মোকাবিলার জন্য সংকল্প গ্রহণ করি। এদিকে তৎকালিন মহকুমা প্রশাসক শাহ মো. ফরিদ আমাদের আনসার এ্যাডজুট্যান্ট আকরাম হোসেনকে জানালেন-
কুষ্টিয়ায় যুদ্ধ লেগে গেছে, কিছু আনসার দিয়ে সাহায্য করেন। এ্যাডজুট্যান্ট সাহেব আমাদের ক্যাম্পের সবাইকে ডেকে নিয়ে বললেন, তোমরা মাতৃভূমির জন্য জীবন উৎসর্গ করতে কে কে রাজী ? আমরা ৮২ জন আনসার রাজী হলাম। দ্রুত রাতের খাওয়া শেষ করে রওনা হলাম। আমাদের হাতে কোন অস্ত্র ছিলনা। মহকুমা প্রশাসক ফরিদ সাহেবের নির্দেশে এ্যাডজুট্যান্ট সাহেবের সঙ্গে গিয়ে রাজবাড়ী পুলিশ লাইন অস্ত্রাগার (জেলখানা সংলগ্ন) থেকে ৮২টি অস্ত্র আনলাম। নুরুন্নবী সাহেবের নেতৃত্বে আমরা ৮২ জন রাত ১০টার দিকে স্পেশাল ট্রেনযোগে রওনা হলাম। রাত ১২ টায় ট্রেন থেকে নামলাম কুষ্টিয়ায়। দূর থেকেই গোলাগুলির শব্দ পেলাম।’
প্রতিবেশী কুষ্টিয়া শহর পাকহানাদার মুক্ত করে প্রচুর গোলাবারুদ উদ্ধার করে আর শহীদ সহযোদ্ধার লাশ ছুঁয়ে নতুন প্রতিজ্ঞায় রাজবাড়ীতে ফিরে আসে আনসার বাহিনী ও সহযোগি সকল যোদ্ধা। রাজবাড়ীতে ফিরে সাধারণ মানুষের ভালবাসা উৎসাহ উদ্দীপনা আর সংবর্ধনার পুষ্পাঞ্জলি নিয়ে গোয়ালন্দঘাটে গিয়ে প্রতিরাধযুদ্ধে অংশগ্রহন করে। কুষ্টিয়া ও গোয়ালন্দের ওইযুদ্ধে অংশগ্রহনকারি পাংশা উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো.আমজাদ হোসেন এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন-
‘তুমুল লড়াইয়ের পর পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে কুষ্টিয়া শহর মুক্ত করি। আমরা মেশিনগান, এলএমজি, সুইচ মিটার সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করি।….১ এপ্রিল সন্ধ্যার পর রাজবাড়ী রেল স্টেশনে এসে নামার সাথে সাথে হাজার হাজার উল্লসিত জনতা ফুলের মালা দিয়ে আমাদের স্বাগত জানায়। মহকুমা প্রশাসক সাহেবও খুব খুশি। আমাদের অভিনন্দন জানালেন। ক্যাম্পে ফিরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ২ এপ্রিল গোয়ালন্দঘাট গেলাম। ১৪৪ জন আনসার ও ইপিআর মিলে আমরা গোয়ালন্দে অবস্থান নিলাম। মহকুমা প্রশাসক সাহেব নিয়মিত আমাদের ক্যাম্পে যাতায়াত করতে থাকলেন। নদী বন্দর প্রটেকশনের জন্য এ্যাডজুট্যান্ট আকরাম ও নুরুন্নবী সাহেবের নেতৃত্বে প্রটেকশনের জন্য আমরা গোয়ালন্দে ক্যাম্প করে থাকলাম।’
জীবিত পাকসেনাদের পরিণতি
কুষ্টিয়া যুদ্ধে পরাজিত পাকবাহিনীর জীবিত সদস্যরা রাতের অন্ধকারে ২টি জীপ ও ২টি ডজ গাড়িতে করে ঝিনাইদহের পথে পালানোর চেষ্টা করে। পলায়নপর পাক-যোদ্ধাদের ফেরার পথে শৈলকূপা ব্রিজ ধ্বংস করে মুক্তিবাহিনীর দল ব্রিজের ফাঁকা জয়গার উপর বাঁশের চাটাই দিয়ে ঢেকে আলকাতরা দিয়ে রং করে পিচঢালা পথের মতো বানিয়ে রাখে। পাক সেনাদের গাড়ি দুটি ওইপথে পালিয়ে যাবার সময় বিশাল গর্তে পড়ে নাস্তানাবুদ হয়। ওই জায়গায় ওঁৎ পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা তখন তাদের ওপর চূড়ান্ত আক্রমণ করে। মেজর শোয়েব সহ বেশ কয়েকজন পাকসেনা কর্মকর্তা সেখানে আহত হয়। অবশিষ্টরা আহত অবস্থায় আশপাশের গ্রামে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসি পলায়নপর এসব পাকসেনাদের পিটিয়ে হত্যা করে। মাগুড়ার বিখ্যাত শ্রীপুর বাহিনী তথা আকবর বাহিনীর প্রধান আকবর হোসেন তার ‘আমি ও আমার বাহিনী’ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন-
‘কুষ্টিয়ার মুক্তিসেনাদের (ইপিআর) সঙ্গে পাকবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরাজয়ের গ-ানি নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় যে ছয়জন পাকসেনা ঝিনেদার লোহাডাঙ্গা গ্রামে ঢুকে পড়ে, মহকুমা প্রশাসক ওয়ালিউল ইসলাম সাহেবের নেতৃত্বে তাদের ঘেরাও করে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই দিন হাজার হাজার মানুষ ঢাল, সড়কি, লাঠি প্রভৃতি নিয়ে পাকসেনাদের উপর হামলা চালায়। এখানে পাক সেনারা গুলি চালিয়ে কয়েকজন নিরীহ লোককে হত্যা করে। তবুও সাধারণ মানুষ অসাধারণ মনোবল নিয়ে রাইফেলের সামনে ঢাল সড়কি নিয়ে মোকাবেলা করে। পাকসেনাদের লাশ মাগুড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়। এসময় পাকসেনাদের অপর একটি দলকে গাড়াগঞ্জের জনগণ ও পুলিশ অভিনব কায়দায় পরাস্ত করে। তারা ওখানে পাকসেনাদের চলার পথে বিশাল খাদ কেটে তার উপর গাছের ডাল ও খড়কুটো দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যা বাইরে থেকে বোঝার উপায় ছিল না যে, ওখানে খাদ আছে। পাকসেনাদের গাড়ি সেই খাদে পড়ে যায়। পড়ে খাদে পড়া পাকসেনাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এখানে নেতৃত্ব প্রদান করেন ঝিনেদা মহকুমা পুলিশ অফিসার মাহবুব এবং শৈলকুপা থানার ওসি আবুল কাসেম।’
কুষ্টিয়া যশোর ফরিদপুর পাবনা মুক্তাঞ্চল ঘোষণা :
৩১ মার্চ এর জয়লাভের ভেতর দিয়ে কুষ্টিয়া যশোর ফরিদপুর রাজশাহী ও পাবনা এলাকা প্রথমবারের মতো পাকহানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল শত্রুমুক্ত রাখতে এবং পাক সেনা রি-ইনফোর্সমেন্ট ঠেকাতে গোয়ালন্দ ঘাট, নগরবাড়িঘাট সহ সর্বত্র যোগাযোগ করে সতর্ক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। এই বিরাট এলাকায় শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে টেলিফোন কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। একাত্তরে মেহেরপুরের এসডিও এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তৌফিক-ই-এলাহী লিখেছেন-
‘উত্তর পূর্বে আমরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজের উভয় পাশে ঢাকা হতে আক্রমণ প্রতিহত করার প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজে আমাদের দুই প্লাটুনেরও কম ইপিআর জোয়ান ছিল। এই সময় আমরা ফরিদপুর, গোয়ালন্দ, পাবনা, নাটোর এমনকি নওগাঁর সথে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হই। এই সময়কালে টেলিফোন কর্মীদের সহায়তা এবং তাদের দেশপ্রেম আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপরোল্লিখিত কয়েকটি জায়গায় আমরা সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করেছিলাম। গোয়ালন্দ মহকুমা প্রশাসক শাহ মোহাম্মদ ফরিদের অনুরোধে আমরা একটি ক্ষুদ্র ইপিআর বাহিনীকে গোয়ালন্দের শত্রু মোকাবেলার জন্য প্রেরণ করি। এমনকি আমরা পাবনা দখলের পর নগরবাড়িঘাটে শত্রু মোকাবেলার জন্য ক্ষুদ্র একটি বাহিনী প্রেরণের প্রস্তুতি নিই। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল যশোর পাকসেনাকে কোনঠাসা করা এবং ঢাকা হতে কোন রকম রি-ইন ফোর্স বা আক্রমণকে প্রতিহত করা।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আমরা কুষ্টিয়া যশোর (শুধু সেনানিবাস বাদ দিয়ে) ফরিদপুর পাবনা রাজশাহীকে মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করি।’
৩১ মার্চ আহত অবস্থায় লেঃ আতাউল্লাহ শাহ ধরা পড়ে। ১ এপ্রিল কুষ্টিয়া শহর শত্রুমুক্ত হয়। ২ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার মেজর ওসমান চৌধুরী লেঃ আতাউল্লাহ শাহ’র জবানবন্দী নেন। কুষ্টিয়া বিজয়ের পর দখল করা সকল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ চুয়াডাঙ্গা সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাবু মল্লিক : মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস সংগ্রাহক। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের জ্ঞানকোষ- রাজবাড়ী জেলা চ্যাপ্টারের লেখক, গবেষক ও সম্পাদক। রাজবাড়ী জেলার প্রথম সংবাদপত্র সাপ্তাহিক অনুসন্ধান এবং জেলার প্রথম দৈনিক সহজকথার (অধুনালুপ্ত) সম্পাদক।