বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বরিশালে লঞ্চে গৃহবধূ শারমিন আক্তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ওই গৃহবধূকে তার ‘স্বামীই হত্যা’ করেছেন। টিভি দেখে লঞ্চের কেবিন থেকে মেয়ের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি জানতে পারেন তার বাবা।এ ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা বরিশাল কুয়াকাটা ২ লঞ্চের লস্কর কেবিন থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে তার স্বামী মাসুদ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শারমিনের বাবা এনায়েত হোসেনের। তিনিই মামলার বাদী হয়েছেন।
জানা যায়, ১৮০০ টাকায় কেবিনটি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেওয়া হয়। সকালে কেবিনটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়। সন্দেহ হলে তালা খুলে কেবিনের ভেতর তরুণীর লাশ দেখতে পাওয়া যায়। এর পর পুলিশে খবর দেওয়া হয় বলে জানান লঞ্চের লস্কর মো. সোহাগ। রাতে নিহত শারমিনের বাবা জানান, টিভি দেখে জানতে পারি আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারপর বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জের উত্তর রফিয়াদী থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে শনাক্ত করি।
বাবা এনায়েত বলেন, এক বছর আগে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পশ্চিম গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা জলিল হাওলাদারের ছেলে মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় আমার মেয়ে শারমিন আক্তারের।এর আগে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানায় আমার মেয়েকে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ মামলা করা হয়। ওই মামলা নিষ্পত্তির জন্য উভয় পরিবারের সম্মতিতে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের পরবর্তীতে শারমিনকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময় শারমিনকে নির্যাতনের খবর শুনেছি এবং পরে এক সময় তারা দুজন মাঝে মধ্যে আলাদা থাকতো বলেও শুনেছি।তিনি বলেন, শারমিন ১২ বছর ধরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে কুনিপাড়ায় থেকে গার্মেন্টেসে চাকরি করতো। বিয়ের আগে আমাদের সহযোগিতা করলেও বিয়ের পর কোনো খোঁজ খবর রাখতো না। এমনকি তারা যে বরিশালে লঞ্চে করে আসছে সেটাও আমরা জানতাম না।
তিনি অভিযুক্ত মাসুদের ফাঁসির দাবি করেছেন।শারমিনের চাচাতো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, বিকাল ৩টা গণমাধ্যমে খবর দেখে নিশ্চিত হই শারমিনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি। পরে লঞ্চে এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শারমিনের সঙ্গে স্বামী মাসুদের লঞ্চে প্রবেশ এবং সকালে মাসুদের একা বের হওয়ার দৃশ্য দেখতে পাই। আমার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শারমিনের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত করবে নৌ পুলিশ। আর আমরাও ছায়া তদন্ত করবো।বরিশাল নৌ সদর থানার ওসি হাসনাত জামান বলেন, আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।