ভারি বৃষ্টির দেখা মেলে না অনেক দিন। মাঝে মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হয়। কিন্ত সারাদিন থাকে প্রচন্ড রোদ। রোদের সাথে ভ্যাপসা গরম। বাতাস থাকলেও সে প্রচন্ড গরম। গরমে হাসফাস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে নিম্ম আয়ের সাধারণ মানুষের। প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমেও জীবনের তাগিদে কাজ করতে হয়।
শুক্রবার রাজবাড়ীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত কয়েক দিন যাবৎ ৩৪ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলমান রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার রিক্সা চালক সোরহাব হোসেন জানান, বয়স বেড়েছে। আগের মত কাজ কর্ম করতে পারি না। কিন্ত কি করার বাধ্য হয়ে জীবনের তাগিদে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে টানা রিক্সা চালাতে হয়। কিন্ত বেশ কয়েক দিন যাবৎ গরমে আর চলে না। এত গরমে রাস্তায় মানুষও অনেক কম রয়েছে। সকাল থেকে রোদের তাপমাত্রা অনেক। বেলা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা আরোও বৃদ্ধি পায়। দুপুর না হইতে ক্লান্ত হয়ে যাই। তিনি আরোও জানান, গরমের মধ্যে ক্লান্ত হয়ে পরলে যে কোন গাছের নিচে একটু বিশ্রাম নেওয়া হয়। একটু পরও আবার শুরু করতে হয় রিক্সা চালানো।
এসময় পাশে থাকা রিক্সা চালক বাচ্চু মিয়া বলেন, কষ্ট বেশি আয় কম। কারণ এত গরমে রাস্তায় মানুষ বের হতে চায় না। আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে আসতে হয়। একদিন আয় না করলে সংসারে সকলের না খেয়ে থাকতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে রিক্সা নিয়ে এই বয়সে বের হই।
এসময় চা-সিংগারা দোকান মালিক কুব্বাত শেখ বলেন, আমার এই ছোট্ট দোকানের উপর ৮জন মানুষের চলে। একদিন দোকান বন্ধ রাখতে পারি না। বাধ্য হয়ে এত গরমেও প্রতিদিন দোকান করতে হয়। তিনি বলেন, প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম। আবার এই গরমের মধ্যে চা-সিঙ্গারা বানাতে হচ্ছে। এত গরম যেন আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। এত গরমের মধ্যে যোগ হয়েছে প্রতিটি জিনিসের মূল্যে অনেক বেশি।
এসময় মোহন নামের এক ষার্টোদ্ধ বৃদ্ধ বলেন, গরমে ঘুমাতে পারি না। বসতে পারি না। কাজ করতে পারি না। এই বয়সে পেটের জন্য কাজ করতে হয়। কিন্ত প্রচন্ড এই গরমে আর চলে না। তাই একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, সংসার চালাতে প্রতিদিন কমপক্ষে শত টাকা প্রয়োজন। কিন্ত ২শত টাকার বেশি আয় করতে পারি না। তারপর বসে থাকবো কিভাবে।
এসময় কথা হয় কয়েকজন জেলের সাথে, জেলেরা বলেন, প্রচন্ড রোদ। নদীতে তাপমাত্রা আরোও বেশি। গরমে সহ্য করা যায় না। চার পাশে বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোন জায়গা নেই। তাই নৌকা একটি জায়গায় নোঙর করে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা। রোদের তাপমাত্রা কমে গেলে পুনরায় মাছ ধরার জন্য নদীতে জাল ফেলতে হবে।