শফিকুল ইসলাম শামীম ॥ রাজবাড়ী জেলায় বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে শতশত কাঠের বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা। সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের পর এবার কালিজিরা থেকে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন। জানা যায়, ৪২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা এবং ৫টি উপজেলা নিয়ে রাজবাড়ী জেলা গঠিত। এই জেলা কৃষি প্রধান। রাজবাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৯১ হেক্টর জমিতে কালিজিরা চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে কালিজিরা থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় কাঠের তৈরি শতশত বক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা।
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা থেকে আগত মৌয়াল মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা আমাদের পেশা। সরিষা, কালিজিরা এবং আম বাগান ও নিচু বাগানে কাঠের তৈরি বক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করে থাকি। তিনি বলেন, অনেক আগে থেকে রাজবাড়ী জেলার সদর, বালিয়াকান্দি, পাংশা ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাঠের তৈরি বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেছি। এখন কালিজিরা থেকে মধু সংগ্রহ করছি। তিনি বলেন, সরিষা থেকে সপ্তাহে যে পরিমাণ মধু হয় কালিজিরা থেকে অনেক কম হয়। তবে কালিজিররা মধুর অনেক নাম এবং ভাল। মৌয়ালদের তথ্য সূত্রে জানা যায়, ১৫০ টি বাক্স বসানো থাকলে ১০/১২ দিন পর পর মধু ভাঙানো যায়। সেখান থেকে সরিষা ফুলে ৮/৯ মণ মধু পাওয়া পায়। সরিষা ফুলের মধু প্রতি মণ ১০/১২ হাজার টাকা। কালিজিরা থেকে ১০/১২ দিনে ১৫০ কাঠের তৈরি বক্স থেকে ২/৩ মণ মধু ভাঙানো যায়। যার প্রতি মণ ৩০/৩৫ হাজার টাকা।
বালিয়াকান্দি, পাংশা ও গোয়ালন্দ উপজেলার একাধিক কৃষক বলেন, আগে মৌয়ালদের বক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়া হতো। কিন্ত কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে মৌয়ালদের সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। কারণ ফলন থেকে মধু সংগ্রহ হলে ফসল ভাল হয়।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এসএম সহীদ নুর আকবর জানান, মধু চাষ করলে ফসল ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে মৌমাছি কালিজিরা পরাগায়ণে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। রাজবাড়ী জেলায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৩৯১ হেক্টর জমিতে কালিজিরা চাষ হয়েছে।