ভৌগলিক কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট গুরুত্ব বহন করে। গত ২৫ জুন উদ্বোধনের পর থেকে ২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। সেই থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহনের খরা দেখা যায়। তবে ঈদে ঘরমুখি যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ দেখা যায়। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ থাকলেও সুন্দর পরিবেশে দুর্ভোগ মুক্ত হয়ে গন্তব্য স্থানে যেতে পেরেছে। শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিন-পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখি যাত্রীদের দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে উপচে পরা ভিড় দেখা যায়।
শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় দেখা যায়, প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের চেয়ে যাত্রী বেশি নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরিগুলো ছেড়ে আসছে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটে। যাত্রীরা দৌলতদিয়া ঘাট থেকে গন্তব্যস্থানে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহনে যাচ্ছে। এদিকে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখি যাত্রীদের চাপ থাকার কারণে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়েছে সাধারণ মানুষের। ।
গাজীপুর থেকে মধুখালীগামী নারী যাত্রী লাভলী করিমী বলেন, মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহনের চাপ থাকলেও তেমন কোন কষ্ট হয়নি। ভাড়া বেশি লাগলেও গাজীপুর থেকে সহজে পাটুরিয়া ঘাটে এসেছি। কিন্ত পাটুরিয়া থেকে ২কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এসে ফেরিতে পার হয়ে দৌলতদিয়া এসেছি। দৌলতদিয়া ঘাটেও অনেক কষ্ট হচ্ছে। ২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে গাড়ীতে উঠতে হচ্ছে। তিনি হাসি মুখে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পূর্বে ঘাট পার হতে জীবন শেষ হয়ে যেত। মনে চাইতো না আর কখনও এই নৌরুট দিয়ে চলাচল করি। কিন্ত বাধ্য হয়ে বাড়ী যেতে হতো।
নিশাদ-(১২) নামের একজন বলেন, যানজটের ভয়ে দাদা-নানা বাড়ী গিয়ে ঈদ করার সাহস পায়নি। পদ্মা সেতু শুরু হওয়ায় মা-বাবা এবার গ্রামের দাদা-নানা বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছে। এবার ঈদে খুব মজা হবে। সবার সাথে খুব আনন্দ করতে পারবো। সবার সাথে দেখা হবে।
এসময় পাশে থাকা নিশাদের বাবা বলেন, ঈদে বাড়ী আসলে অনেকের সাথে দেখা-সাক্ষাত হয়। কিন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দুর্ভোগের কথা মনে করলে আর বাড়ীতে যাবার মন চায় না। তবে এবার পদ্মা সেতু শুরু হওয়া অনেকে সেতু দিয়ে গেছে। যেকারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট ফাঁকা থাছে। আশা করি এর চেয়েও সুন্দর পরিবেশে বাড়ী যেতে পারবো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের পোর্ট অফিসার সাজ্জাদ রহমান জানান, শেষ পর্যায়ে ঘরমুখি যাত্রীদের চাপ দেখা যাচ্ছে। তবে উভয় লঞ্চ ঘাটে কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি বলেন. এই নৌরুটে বর্তমান ২০টি ছোট বড় লঞ্চ চলাচল করার কারণে ঘরমুখি যাত্রীরা দুর্ভোগ মুক্ত হয়ে যেতে পারছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট যানবাহনের সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমেছে। ঈদে পূর্বে শুক্রবার থেকে যাত্রীদের চাপ থাকলেও যানবাহনের কোন চাপ নেই। যানবাহনগুলো সহজে গন্তব্য স্থানে যেতে পারছে।