শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪২ অপরাহ্ন

গোয়ালন্দে রাস্তার কাজে ধীরগতি, ভোগান্তি চরমে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মো. সাজ্জাদ হোসেন, গোয়ালন্দ ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৮০ Time View

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া তোরাপ শেখের পাড়া, যদু ফকির পাড়া ও সোনাউল্লা ফকির পাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন একটি রাস্তার কাজে ধীরগতির কারণে জনসাধারণকে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সাধারণ চলাচল, রোগীদের গমন, কৃষি ফসল বাজারে নেয়ার ক্ষেত্রে চরম অসুবিধার মুখে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসী গত মঙ্গলবার মানববন্ধন করে দ্রুত রাস্তাটিতে যান চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন সড়ক হতে উজানচর জিসি ভায়া ফকির পাড়া সড়কটির ২ হাজার ৬৮৫ মিটার বিটুমিনাস কার্পেটিং কাজ করার জন্য চুয়াডাঙ্গার জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পায়। ২টি বক্স কালভার্টসহ সড়কটি নির্মানের চুক্তিমূল্য ৩ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭ হাজার ২৫৪ টাকা। গত ১৮-১০-‘২৪ তারিখ শুরু হয়ে আগামি ১৬-৫-‘২৫ তারিখের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তুসড়কটির কাজের ধীরগতির কারণে তা যথা সময়ে সম্পন্ন না হওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

তোরাপ শেখের পাড়ার কৃষক হুমায়ন আহমেদ, বারেক বেপারী, কুদ্দুস শেখসহ বেশ কয়েকজন বলেন, তাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ, রসুন, কুমড়োসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়েছে। এ সকল ফসলের খুব সামান্য কিছু অনেক কষ্ট করে ঘোড়ার গাড়িতে ঠেলে বাজারে নেয়া যাচ্ছে। তারা জানান, ঘোড়ার গাড়িতে প্রতি মন পেঁয়াজ নিতে ১’শ টাকা করে ভাড়া দিতে হচ্ছে। আগে লাগত মাত্র ৩০ টাকা। এ অবস্থায় উত্তোলন খরচ ও পরিবহন খরচের পেছনে পেঁয়াজ বিক্রির অধিকাংশ টাকাই ব্যায় হয়ে যাচ্ছে। এভাবে তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন। অনেকের পাকা পেঁয়াজ মাঠেই নষ্ট হচ্ছে।

যদু ফকির পাড়ার কৃষক হারুন বেপারি বলেন, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। এতে তার ২৮০ মণ ফলনের আশা রয়েছে। মাঠের সব পেঁয়াজ ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেকে গেছে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে পেঁয়াজ ঠিক মতো বাজারে নিতে পারছেন না। মাথায় করে আর কয় মন পেয়াজ বাজারে নেয়া যায় বলেন!

অন্ত¡সত্ত্বা সুমী আক্তার আশংকা প্রকাশ করে বলেন, তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। তাকেই নিয়মিত বাজারে গিয়ে সংসারের কেনাকাটা করতে হয়। বর্তমানে বালুর মধ্য দিয়ে চলাচলে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া রাত-বিরাত কখন কোন বিপদ হয়ে যায় বুঝতে পারছি না। রাস্তাটা ভালো থাকলে তেমন একটা ভয় পেতাম না। বালুর মধ্য দিয়ে সাধারণ রোগীদের চলাচলেও বর্তমানে খুবই কস্ট হচ্ছে বলে তিনি জানান।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. খোকন উজ্জামান ‘দৈনিক আমাদের রাজবাড়ী’কে বলেন, ওই এলাকার সাধারণ কৃষক জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে দ্রুত কাজটি সম্পন্নের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।

ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা সত্য। তবে বেশি তাড়াহুড়ো করে কাজ করলে কাজের মান খারাপ হতে পারে। তাছাড়া বালু রুলিং করার জন্য রোলার মেশিন জোগার করতে সমস্যা হচ্ছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন মিয়া জানান, রাস্তাটির কাজের মাত্র ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের গতিও অত্যন্ত মন্থর। পুরোনো রাস্তার উপর হতে ইট তুলে ফেলে বালি বিছিয়ে দেয়াতে বর্তমানে সেখান দিয়ে কোন যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না। এতে করে জনসাধারণের ভোগান্তি হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। কাজের গতি বাড়িয়ে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতামূলক একটি পত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com