শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন

গোয়ালন্দে ছয় কৃষকের জমির ফসল বিনষ্ট করলো কারা

মো. সাজ্জাদ হোসেন, গোয়ালন্দ ॥
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৫ Time View

রাজবাড়ীর পদ্মার পাড়ে রাতের আঁধারে ছয় কৃষকের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। হঠাৎ এমন ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সোমবার গভীর রাতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের পদ্মার পাড়ে চরাঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক পরিমল ঘোষ।

জানা গেছে, স্থানীয় ছয় কৃষকের ৫৯৪ শতাংশ জমির পিয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়া গাছ রাতের আঁধারে কেটে দেয় ও বিষাক্ত বিষ প্রয়োগ করে নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা। ঋণ করে ফসলী খেতের পরিচর্যা করে পরিবারের ভরণপোষণ করার জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা। তা এখন নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। ভুক্তভোগী কৃষকরা হলেন স্থানীয় মুক্তার হোসেন, পরিমল ঘোষ, জয়নাল শেখ, ইমরান খান, সোহাগ গাজী ও হেলেম শেখ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার পাড়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মহিদাপুর চরে লেবুর বাগান সংলগ্ন মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবং পেয়াজ ও রসুনের ক্ষেত সাদা ও মিষ্টি কুমড়ার গাছ গুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। কিছু কিছু জমির পেয়াজ ও রসুন পা দিয়ে পিষে দেওয়া হয়েছে। এবং অন্যদের জমির ফসল ঠিক আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ শেখ বলেন, ছয় কৃষক ফসল উৎপাদন করে সংসারের ব্যয় বহন করেন। সকালে তাদের চিৎকারে শুনে এসে দেখি তাদের ফসলি খেতের মিষ্টি কুমড়া গাছের গোঁড়া কাটা এবং পিয়াজ ও রসুনের খেত সাদা। ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকতে পারে কিন্তু তাদের ফসলি খেত কেটে তাদের রোজগারের পথ বন্ধ করা, কোনো সুস্থ মানুষের কাজ হতে পারে না।

ভুক্তভোগী কৃষক মুক্তার হোসেন বলেন, আমরা ছয়জনে এখানে ১৮ বিঘা জমিতে পেয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়া আবাদ করেছিলাম। বাচ্চু মন্ডল নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন আমাকে জালাতন করছে। সে আমরা কাছ থেকে এর আগে ৫৫,০০০ টাকা চাঁদাও নিয়েছে। ২৫ নভেম্বর রাতের আধারে লোকজন এনে ফসল গুলো বিষ মেরে নষ্ট করে দেয় এবং মিষ্টি কুমড়া গাছ গুলো উপড়ে উঠিয়ে ফেলেছে। রসুন ও পিয়াজ বিষ দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে ও অনেক পেয়াজ ও রসুন তারা নিয়ে গিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। আমরা থানা পুলিশ কে সাথে সাথে জানায়ছি। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। এঘটনার পর থেকে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার আর উঠে দাড়ানোর মতো কোন পরিস্থিতি নাই। আমি ১০-১২ লাখ টাকা এখানে ব্যয় করেছি। আমার আশা ছিলো ২০-২২ লাখ টাকা বিক্রি করবো। পেয়াজ, রসুন গুলো বিষাক্ত ঔষধ দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি চাই এর যেনো বিচার হয়। আমি অসহায় লোক আমার কোন লোক নাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল শেখ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়। আমি তাদের গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছি।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান জানান, আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে ভুক্তভোগী ওই কৃষকরা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে তাদের সরকারিভাবে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করা হবে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের তদন্ত চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com