শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন

গোয়ালন্দে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪
  • ৯১ Time View

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি গোয়ালন্দ বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালীদের মাধ্যমে চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত ১১ জুন মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

জানা গেছে, ঘটনার তিনদিন পর শিশুটিকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখান থেকে পুলিশকে অবগত করে অধিকতর পরিক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে স্থানাস্তর করা হয়। পুলিশ ভিকটিম ও তার পরিবারকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি অভিযোগ গ্রহণ করে।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার দিন বাড়ির পাশের পাটক্ষেতের পাশ দিয়ে ওই ছাত্রী পুকুরে কাপড়-চোপর ধুতে যায়। এ সময় সিরাজ খাঁ নামের এক ব্যক্তি সেখানে ঘাস কাটছিল। সে সুযোগ বুঝে শিশুটির গলার ঘাস কাটার কাঁচি ঠেকিয়ে পাট ক্ষেতের ভিতরে নিয়ে ধর্ষণ করে।

বৃহস্পতিবার শিশুটির মা জানান, তার মেয়ে অনেকটা এলোমেলো অবস্থায় বাড়ি ফিরে এলে আমি তাকে কি হয়েছে জানতে চাই। ভয়ে প্রথমদিকে কিছু না বললেও পরে সে সব জানায়। এরপর আমি বিষয়টি কাউন্সিলর, দুই প্রতিবেশিকে জানাই। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করে। ওইদিন সন্ধ্যায় সিরাজের সাথে আমার দেখা হলে সে বিষয়টি চেপে গিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে চায়। যাদের কাছে বিষয়টি বলেছিলেন তারা আমাকে মামলা না করার পরামর্শ দেয়। তারচেয়ে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারা সবাই আমার সাথে মূলত তালবাহানা করে সময় পার করে। এর মধ্যে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনার দুইদিন পর ১৩ জুন সকাল ১০ টার দিকে তাকে গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে এক মহিলা ডাক্তার তার মেয়েকে পরিক্ষা করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে এবং থানার পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ এসে তাদেরকে হাসপাতাল হতে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে ওসি, এলাকার কমিশনার ও আরো অফিসার ছিল। ওসি তাদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে একটি লিখিত অভিযোগও নেন। পরে বেলা ৩ টার দিকে আমাদের ছেড়ে দিলে আমরা বাড়িতে চলে আসি।

শিশুটির বড় বোন জানান, আমরা লোক লজ্জার ভয় এবং ছোট বোনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে অনেকটা চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সিরাজ ও তার লোকজন আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রানবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভিকটিমের পরিবার হতেই আমাদের বাঁধা দেয়া হয়। তারা মামলা রুজু করায় আগ্রহী নয়। শুনলাম তারা ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরন দাবি করেছে। অভিযুক্ত সিরাজ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে চেয়েছে। এ নিয়ে দেনদরবার চলছে। তবে ভিকটিমের পরিবার চাইলে আমরা মামলা রুজু ও আসামি গ্রেফতার করব।

টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি মীমাংসায় দেন-দরবার করা হচ্ছে বলে কাউন্সিলরও স্বীকার করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com