রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জায়গা রাতের অন্ধকারে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তি আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে গত ১২ এপ্রিল গভীর রাতে টিনের ছাপড়া তুলেছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। জানা যায়, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাড়াদী মৌজা ও বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর মৌজার রেলওয়ের জমি ১৮ বছর আগে লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন বাড়াদী গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল মুন্নাফ মিয়ার ছেলেরা। সম্প্রতি বহরপুর গ্রামের নুরু শেখ নামে এক ব্যক্তি ওই জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে আব্দুল মুন্নাফের ছেলে মোঃ গোলাম মোস্তফা গত ২০ মার্চ আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে অভিযোগটি আমলে নিয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারায় তা গ্রহণ করেন।
অভিযোগ নিস্পত্তি হওয়ার আগে উক্ত স্থানে নির্মাণ বন্ধ ও কোন প্রকার আইন ভঙ্গ না হয় সে বিষয়ে ওসি বালিয়াকান্দিকে নির্দেশ দেন। আদেশ মোতাবেক গত ২১ মার্চ বালিয়াকান্দি থানার এএসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম নোটিশ দেন। নুরু শেখ পুনরায় ওই জায়গা দখল করতে গেলে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসে। এসময় রাজবাড়ী রেলওয়ের ১৪ ও ১৫ নং কাচারীর কানুনগ মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি কাগজ বের করে দেন। যাতে লিখা অবৈধ দখলে থাকায় ক্ষতিপূরণ আদায় করা হলো। সেই কাগজটিই তিনি লাইসেন্স ধরে নিয়েছেন। এরপরও গত ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লোকজনের সহায়তায় ছাপড়া ঘর নির্মাণ করেন। সকালে পুলিশ এসে আদালতের আইনকে রক্ষা করতে ঘরটি অপসারণ করেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে পূনরায় সেই স্থানে টিনের ছাপড়া তুলেছেন নুরু শেখ। এ বিষয়ে মামলার বাদী মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, রেলওয়ের কাছ থেকে ২ একর ৩৫ শতাংশ জমি লিজ গ্রহণ করে দীর্ঘদিন চাষাবাদ করে আসছি। আমাদের লিজ নেওয়া জায়গায় দয়া বশতঃ নুরু শেখকে চায়ের দোকান করতে অনুমতি দিলে তিনি চা দোকান করে আসছিলেন। সম্প্রতি তিনি কারো কাছে কিছু না শুনেই পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
এ বিষয়ে দখলদার নুরু শেখের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ – সম্পত্তি কর্মকর্তার কার্যালয় রাজবাড়ীর ১৪ ও ১৫ নং কাচারীর কানুনগো মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম এর কাছে টাকা দিয়ে কাগজ করেছি। আমি এখানে বৈধ মালিক। আদালত কাজ বন্ধ করতে বলেছিল। কয়েক দিন বন্ধ রেখেছিলাম। এখন আমার জায়গায় আমি ঘর তুলেছি।
রাজবাড়ী কাচারীর কানুনগো মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, আমি রেলওয়ের বহরপুর ও বাড়াদী মৌজার জমিতে অবৈধভাবে দখলে রাখায় মোঃ নুরু শেখ এর কাছ থেকে জরিমানা বা ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ আদায় করে ২০২০ সালে সরকারী কোষাগারে জমা করে দিয়েছি। এবং সরকারী সম্পত্তি ছেড়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছি। আর কোনোভাবেই লিজ প্রদান করা হয়নি। তবে সেখানে কংক্রিটের স্থাপনা হচ্ছে তা আমার জানা নেই। সেখানকার স্টেশন মাষ্টার আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে স্থাপনা উচ্ছেদ করবো। তবে আলহাজ্ব আব্দুল মুন্নাফ মিয়ার নামে দুইটি লাইসেন্স যার নাম্বার ১০১৯৭ ও ১০১৯৮ এর বিপরিতে ২ একর ৩৫ শতাংশ জমি লিজ দেওয়া রয়েছে। সেখানে কারো প্রবেশের অধিকার নেই। আর যদি করে থাকে তবে তা বে-আইনি করবে।