রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ড্রেজিংয়ের খালে ডুবে আহাদ ফকির ওরফে রাতুল (১০) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নতুন ময়ছের মাতুব্বর পাড়ার বাসিন্দা, কাঠমিস্ত্রী মিলন ফকিরের একমাত্র ছেলে। রাতুল গোয়ালন্দের লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কপোতাক্ষ শাখার ছাত্র।
জানা গেছে, স্কুল বন্ধ থাকায় রাতুল বুধবার (৭ জুন) দুপুর ২ টার দিকে খেলাধুলা শেষে গ্রামের খেলার সাথীদের সাথে বাড়ির পাশের মরা পদ্মা নদীতে গোসল করতে যায়। নদীর অধিকাংশ এলাকা শুষ্ক থাকায় তারা সকলে মিলে কাছাকাছি একটি গভীর খালে নামে। ড্রেজিং করে মাটি তোলায় সেখানে এ খালের সৃষ্টি হয়।
রাতুলের বন্ধু হাসান, জুবায়ের, সৌরভসহ কয়েকজন জানায়, রাতুল সাঁতার জানত না। ও পানির কিনারেই ছিল। কিন্তু সম্ভবত কাঁদায় পা পিছলে গভীর পানিতে চলে যায়। আমরা ভেবেছিলাম সে গোছলের জন্যই ডুব দিয়েছে। কিন্তু অনেকক্ষন পরও না ওঠায় আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। কিন্তু না পেয়ে দৌড়ে গিয়ে বড়দের ডেকে আনি।
প্রতিবেশী উজ্জ্বল শেখ জানান, রাতুলের পানিতে ডোবার খবর শোনা মাত্রই আমিসহ কয়েকজন দৌড়ে সেখানে যাই। কিন্তু পানির গভীরতা বেশী হওয়ায় তাকে উদ্ধার করা খুব কষ্টকর হয়। পরে অনেকজন মিলে তল্লাশি করে তাকে খুঁজে পাই। পরে গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
ইদ্রিসিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার সাইদুর রহমান, স্কুল শিক্ষক শামীম শেখসহ অনেকেই বলেন, মরাপদ্মা নদীতে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে দেদারছে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তীতে বহু গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। এই রকম খালে ডুবে দুই/তিন বছর আগেও তাদের এলাকার আরেকটি ছেলে মারা যায়। এভাবে একেক সময় একেক মায়ের কোল খালি হলেও নদীর বালি বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালু খেকো চক্র। যেন দেখার কেউ নেই!