রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ‘ম্যাগনেটিক রাইস’ নামে কথিত মূল্যবান রাইস প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। গ্রেফতার করেছে চক্রের এক সদস্যকে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মোড়ানো ২৮টি ২মিলি ভায়াল ও ৭টি মাইক্রো সেন্ট্রাফিউজ টিউব।
প্রতারক চক্র একে অতি মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক চাল’ বলে বিভিন্ন ভাবে প্রচারণা করছিল। বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছিল মোটা অংকের টাকা। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম ক্ষিতীশ বিশ্বাস (৩৮)। সে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার শালিনাবক্সা গ্রামের মারকণ্ঠ বিশ্বাসের ছেলে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে থানা পুলিশ। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কিছুদিন ধরে একটি প্রতারক চক্র অভিনব কায়দায় সাধারণ চালকে অতি উচ্চমূল্যের ‘ম্যাগনেটিক চাল’ বলে প্রচারণা চালিয়ে নিরীহ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে আসছিল। এর জন্য তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এর প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। প্রতারণার কাজে তারা গবেষণাগার, ঔষধ কোম্পানি ও মেডিকেলে ব্যবহৃত ভায়াল এবং মাইক্রো সেন্ট্রিফিউজ টিউবে অতি আকর্ষণীয় করে সুকৌশলে একটি করে চাল স্থাপন করে। পরে এটিকে ম্যাগনেটিক চাল বলে প্রচার করে। উক্ত ভায়াল ও মাইক্রো সেন্ট্রিফিউজ টিউবগুলোকে সুন্দরভাবে সু-কৌশলে কয়েকটি স্তরে কাগজ, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে পেঁচিয়ে ও সর্বস্তরের উপরে টেপ পেঁচিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। পরে তা মানুষের কাছে প্রতারণামূলকভাবে বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
পুলিশ জানায়, কিছুদিন ধরে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ এমন খবর জানার পর চক্রটিকে গ্রেপ্তারে তৎপর ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রাখাল চন্দ্র দেবনাথ সহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলার বাংলাদেশ হ্যাচারীজের সামনে যাত্রীবেশী ক্ষিতীশ বিশ্বাস নামের উল্লেখিত ব্যক্তিকে আটক করে। এ সময় তার কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে ২৮টি ২ মিলি ভায়াল ও ৭টি মাইক্রো সেন্ট্রিভিউজ টিউব পাওয়া যায়।সে গোয়ালন্দের এক ব্যাক্তির নিকট কথিত ম্যাগনেটিক রাইসগুলো সরবরাহের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, প্রতারকরা সাধারণ একটি চালকে একটি শিশিতে রেখে কয়েক স্তরে কাগজ, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে পেঁচিয়ে তার ওপর টেপ পেঁচিয়ে আকর্ষণীয় করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। চক্রের ব্যাপারে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। আশা করি শীঘ্রই মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। তিনি এ বিষয়ে সর্বসাধারণকে সচেতন থাকার আহবান জানান।