রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

বন্ধ হচ্ছে না বাল্যবিয়ে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৯৩ Time View

রাজবাড়ীতে বন্ধ হচ্ছে না বাল্য বিয়ে। দরিদ্রতা ও অসচেনতার কারণে প্রতিদিন বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে অসংখ্য শিশু-কিশোরী। বাল্য বিয়ের শিকার হয়ে অকালে সংসার হারিয়ে স্বামী পরিত্যক্ত হচ্ছে অনেকে। নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে এফিডেভিট করে অবাধে বাল্য বিয়ে হচ্ছে। এদিকে কাবিন রেজিষ্টার না থাকায় আইনগত সহযোগিতা বঞ্চিত হচ্ছে নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে এভিডেবিট করে বাল্য বিয়ের শিকার স্বামী পরিত্যক্ত নারীরা।

বাল্য বিয়ের শিকার কিশোরীদের সাথে কথা বলে এমন চিত্র জানা যায়। এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় বাল্য বিয়ের শিকার নদী আক্তার নামের এক কিশোরীর সাথে। নদী আক্তার জানান, বাবা-মায়ের অভাব-অনাটন সংসার। আমরা দুই বোন ও এক ভাই। অভাবী সংসারে আমাদের পড়া-লেখা করানো অসম্ভব হয়ে পরেছে গরীব বাবা-মায়ের। তাই দারিদ্রতা ও অসচেনতার কারণে এসএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট থাকার পরও বড় বোন বৃষ্টিকে বিয়ে দেওয়া হয়। এক বছর যেতে না যেতে আমাকেও (নদী আক্তার) বিয়ে দেওয়া হয়। এক ছেলে নিয়ে বাবা-মা চিন্তা মুক্ত হয়। কিন্ত না, বেশি দিন এই আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি আমার বাবা-মা।

নদী আক্তার আরোও জানান, বড় বোন বৃষ্টি জ্বালা-যন্ত্রনা ও অশান্তি মেনে স্বামী সংসার করছেন। এখন দুই সন্তানের মা হয়েছেন। অকালে দুই সন্তানের মা হওয়ায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। এই অসুস্থ্য শরীর নিয়ে ভাল চিকিৎসা করাতে না পারলেও স্বামী সংসারের অস্বাভাবিক কাজ ও দুই শিশু সন্তানের দেখভাল করতে হয়। এদিকে আমি স্বামী সংসারে কোন ভাবে থাকতে পারছি না। বিয়ে হওয়ার পর এইচএসসি পাস করেছি। স্বামী বাড়ী থেকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে। মেনে নিয়েছি। এখন হচ্ছে প্রতিদিন শাররীক নির্যাতন। যার চিহ্ন আমার শরীর দেখলে শতশত প্রমাণ দেখা যাবে। বিয়ের দুই মাস পর থেকে স্বামী বাড়ীর নির্যাতন শুরু। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এখন আর সহ্য হয় না। গরীব বাবা-মায়ের কথা চিন্তা করে স্বামী বাড়ীর অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্ত স্বামী ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা আমাকে অস্বাভাবিক নির্যাতন করে মৃত্যু ভেবে আমার বাবার বাড়ীর পাশে রেখে চলে যায়। আমার গরীব বাবা-মা স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমাকে নিয়ে চিকিৎসা করেন। আমি বেঁচে আছি, না মরে গেছি এখনও পর্যন্ত স্বামী বাড়ী থেকে কেউ এসে কোন প্রকার খোঁজ-খবর নেয়নি।

কান্না জড়িত কণ্ঠে নদী আক্তার আরোও বলেন, বয়স না হওয়ায় কাবিন রেজিষ্টার না করে শুধু মাত্র এ্যাডভোকেট দিয়ে এফিডেভিট করে বিয়ে হয়েছে। এখন শুনি এই বিয়ের আইনগত কোন ভিত্তি নেই। যে কারণে আমি আইনগত সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমি ও আমার পরিবার নিরুপায়।

রাজবাড়ী বার এসোসিয়েশন এর সদস্য এ্যাডভোকেট অভিজিং সোম অভি জানান, নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে এভিডেভিট করে বিয়ের কোন আইনগত ভিত্তি নেই।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন জানান, বাল্য বিয়ে বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন সময় সচেনতা মূলক সভা-সেমিনার করা হয়। তার পরও অনেকে এভিডেভিট করে বিয়ে করছে। যে বিয়ের কোন আইনগন ভিপ্তি নেই। কাবিন রেজিষ্টার না থাকলে সেই বিয়ে আইন সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com