আমাদের ঋতুচক্রে বৈশাখ মাস এলেই শুরু হয় গরম। যা আষাঢ় শ্রাবণে কিছুটা কমে আসে, কিন্তু এবারের বিরূপ আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এখনও সারা দেশব্যপী চলছে প্রচন্ড দাবদাহ। এর সাথে চলমান রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যেন গোদে বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে।
দেশে তেল সংকটের কারনে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরেছে ভাটা। ২ ঘন্টা করে লোডশেডিং এর কথা থাকলেও প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা করে লোডশেডিং দিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। যে কারনে সৌর বিদ্যুৎ, চার্জার লাইট ও চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে তাল পাখার কদর।
এই ভ্যাপসা গরমে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম বিত্তদের গ্রামীন হস্তশিল্প তাল পাতার হাত পাখাই একমাত্র ভরসা। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে “আমার নাম তালের পাখা শীতকালে ভাই দেইনা দেখা, গ্রীষ্মকালে প্রাণের সখা।” আবার এ নিয়ে গানও রচিত হয়েছে তোমার হাত পাখার বাতাসে আমার প্রাণ জুড়িয়ে আসে।
এই গরমে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা অতিরিক্ত হারে বেড়েছে তাল পাখার চাহিদা। প্রাণ জুড়ানো শিতল বাতাস পেতে বাংলার গ্রামেগঞ্জে পরিবেশ বান্ধব তালপাখার কোন জুড়ি নেই। গ্রামীণ জীবনে গরমকালে এখনো তালের পাখা ভুমিকা অপরিসীম।
আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে পাখার বিকল্প অনেক যন্ত্রের আবিষ্কার হলেও শিতল বাতাশের জন্য তাল পাখার জুড়ি নেই।
গরম আসলেই গ্রামে গঞ্জে হাটে বাজারে দোকান পাটে ও বিভিন্ন মেলায় এই তাল পাখা বিক্রয় করতে দেখা যায়। এছাড়া বোঝা বেধে কাঁধে তুলে নিয়ে লঞ্চ ট্রেন ফেরি ও রাস্তা ঘাটে ফেরি করেও তাল পাখা বিক্রয় করতে দেখা যায়।
সোমবার রাজবাড়ীর পাংশা বাজারের পাখা বিক্রেতা লিটন স্টোরের লিটন কুমার কুন্ডুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ভাদ্র মাসের শেষ দিক এখন। আর কয়দিন গেলেই ঠান্ডা পরা শুরু হবে। তবে গরমের শেষ সময় হলেও প্রচন্ড গরম পড়ায় ও লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় তাল পাখার চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার সাথে সাথে দামও বেড়েছে। আগে যে পাখা বিক্রয় হতো ২০ টাকা তা এখন ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন ৪-৫ বারও লোডশেডিং হচ্ছে এই গরমে যে হারে লোডশেডিং হচ্ছে তাতে নিন্ম মধ্যবিত্তদের তাল পাতার পাখা ছাড়া কোন উপায় নেই। তারা আরও বলেন, আধুনিক ইলেকট্রনিক্স পন্যের পাশাপাশি দেশিও এ হস্তশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে অধিকতর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।