দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে তীব্র স্রোত ও ফেরি সংকটের কারণে উভয় ফেরি ঘাটে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে। এতে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক চালক এবং যাত্রীবাহী বাসের চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। হঠাৎ ফেরি ভাড়া বৃদ্ধি করায় চালকদের দুর্ভোগ আরোও দ্বিগুন হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া এবং পাটুরিয়া উভয় ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এবং একাধিক ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক মাস যাবৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২০/২১টি ছোট বড় ফেরি চলাচল করে। উভয় পারের ঘাটগুলো স্বাভাবিক ছিল। যে কারণে এক মাস যাবৎ দুর্ভোগ বিহীন ফেরি পারাপার হয়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহারকারী চালক ও যাত্রীরা। কিন্ত হঠাৎ পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত এবং ৪টি রোরো (বড়) ফেরি বিকল হওয়ার কারণে উভয় পারের যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের ৬কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে পন্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের দুইটি সারি রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১২টি রোরো (বড়), ৬টি ইউটিলিটি (ছোট), ২টি ডাম্ব এবং ১টি কে-টাইপ সহ মোট ২১টি ফেরি চলাচল করে। তবে রোরো (বড়) বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান ও রোরো (বড়) ডা. গোলাম মওলা এই দুইটি ফেরি আরিচা ও কাজিরহাট নৌরুটে চলে যায়। রোরো (বড়) ফেরি শাহ্ মখদুম এবং ১টি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি একটি বিকল থাকায় পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। যে কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরির সংখ্যা কমে গেছে।
হজ্ব যাত্রীবাহী বাস শ্যামলী পরিবহনের এক বয়স্ক নারী যাত্রী বলেন, হজ্বে যাওয়ার জন্য এসেছি। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে যানজটের কারণে প্রায় ৩ঘণ্টা যাবৎ অপেক্ষায় আছি। যেতে পারছি না। দীর্ঘ সময় গাড়ীর মধ্যে থেকে অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে।
এসময় পাশের সিটে বসা ষাটোর্ধ্ব অন্য এক যাত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফেরি ঘাটে যেতে পারছি না। আরোও কত সময় লাগবে সঠিক সময় কেউ বলতে পারছে না। গরমের মধ্যে আমার মত অনেকে অসহায়ের মত অপেক্ষায় আছে।
পন্যবাহী ট্রাক চালক আব্দুল কুদ্দস পাটোয়ারি জানান, গত এক মাস যাবৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া কোন ঘাটে দুর্ভোগ হয়নি। ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠতে পেরেছি। হঠাৎ এই নৌরুটের ফেরির সংকট হওয়ার কারণে যানজটে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, ঘাট সংশ্লিষ্ট ইচ্ছা করলে ঘাট ফাঁকা রাখতে পারে। কিন্ত ঘাটের এই কৃত্রিম যানজট বছরের পর বছর চলে আসছে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, পদ্মা নদীতে স্রোত থাকার কারণে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৫০টি টিপ কমে গেছে। এদিকে ২টি ফেরি আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট এবং ২টি ফেরি পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। যে কারণে কিছু যানবাহন উভয় ঘাটে পারের অপেক্ষায় রয়েছে।