রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ নামের একটি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন এনজিও গ্রাহকদের অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম নামে একজন ভুক্তোভোগী গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, উজানচর ইউনিয়নের জামতলা হাটে তার দোকানে ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ সংস্থার কর্মকর্তারা গিয়ে সহজ শর্তে ১০ লাখ টাকার ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। তবে, ঋণ পেতে হলে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় ও ৫ হাজার টাকা বীমা বাবদ জমা দিতে বলে। আমি অনেক কষ্টে ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেই। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ঋণ নিতে গিয়ে দেখি অফিস তালাবদ্ধ এবং সংস্থার কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
এদিকে প্রতারণার খবর জানতে পেরে মঙ্গলবার বিকেলে গোয়ালন্দ পৌর শহরের নিলু শেখের পাড়ায় ফাউন্ডেশনের অফিস শেখ মঞ্জিলে ছুটে আসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী কামরুল ইসলাম।
তিনি জানান, সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার আশায় অনেক কষ্টে তিনি ৬০ হাজার টাকা ঊষার আলো ফাউন্ডেশনে জমা দেন। কিন্তু এখন জানতে পারছি তারা ভুয়া, প্রতারক। এভাবে আরো অনেকের সাথে কাছ থেকে তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা এই প্রতারকদের আটক করে আমাদের টাকা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ভাড়া নেওয়া ভবনের মালিক নাজমুল হাসান জানান, সংস্থাটি প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা ভাড়ার মৌখিক শর্তে গত ১০ মার্চ তাদের বাসায় ওঠে। ২০ মার্চ লিখিত চুক্তি করার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ মার্চ হতে তাদের কেউ আর অফিসে আসছে না।
ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পরিচয়দানকারী মো. রুবেল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মো. মালেক নামের আরেকজনের নাম্বারে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও বারবার সংযোগ কেটে দেন।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রুহুল আমিন বলেন, আমি গত রবিবার জানতে পারি যে, ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ নামে একটি এনজিও এ উপজেলায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। পরে তাদেরকে কাগজপত্র জমা দিতে বলি। তারা দুই দিনের সময় নেয়। কিন্তু আজ জানতে পারলাম তারা পালিয়ে গেছে। সংস্থাটি আমাদের রেজিস্ট্রেশন তালিকাতেও নেই।
গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।