বালিয়াকান্দি উপজেলার সফল ছাগল খামারী অমল শীলের নাম নেই প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের তালিকায়। অমল রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তার নিজ বাড়িতেই তিল তিল করে গড়ে তুলেছে এ খামারটি।
খামারের মালিক অমল শীল জানান, এক সময় তিনি পাশ্ববর্তী রামদিয়া বাজারে মজুরের কাজ করতেন। ভারী বস্তা বহন করতে গিয়ে শরীরে আঘাত পান। যেকারণে কাজ করার ক্ষমতা ছিল না। ৫ সদস্যের পরিবারের খরচ বহন করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পেেড়ন। এরই মধ্যে ট্রাক শ্রমিক শহীদুল ইসলাম তাকে ছাগল পালনের পরামর্শ দেয়। তার পরামর্শে ২০১০ সালে নগদ ২১ হাজার টাকা ও গ্রামীণ ব্যাংক রামদিয়া বাজার শাখা হতে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পাবনা জেলা হতে ৫৬ হাজার টাকা দিয়ে উন্নত জাতের ৪টি ছাগল কিনে লালন পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ৫৬ টি ছাগল। তিনটি রয়েছে উন্নত জাতের। উন্নত জাতের ৩/৪ মাসের বাচ্চা ৩০/৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। তার খামারে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল রয়েছে। প্রতিবছর বয়ষ্ক ছাগলগুলো চট্টগ্রামে বেশ ভালো দামে বিক্রি করেন। খামারে উন্নত জাতের মধ্যে রয়েছে তোতা মাদ্রাজী, তোতা মনীপুরী, তোতাবাংলা, হরিয়ানাবাংলা, তোতা ক্রস, সিংদী, রামছাগল ও দেশী ব্লাক বেঙ্গল।
প্রতিদিন উন্নত জাতের বাচ্চা পাওয়ার আশায় পাশ্ববর্তী উপজেলা পাংশা, কালুখালী ও মধূখালী হতে খামারে আসে। জাত অনুযায়ি হিট হওয়া ছাগল প্রতি ২শ হতে ১ হাজার ২শ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। দরিদ্র মানুষের টাকা না থাকলে বিনা খরচে কাজ করে থাকে। খামারের আয় দিয়ে ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। বাড়ীতে পাকা ঘর তুলেছেন। ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০ শতাংশ জমি কিনেছেন।
বর্তমানে ছেলে তার কাজের সহযোগিতা করছে। তার খামারে উন্নতির পিছনে বড় অবদান স্ত্রী নিস্তার শীলের। স্ত্রী তার ছেলে, পুত্রবধূ, মেয়ে ও মেয়ে জামাতাকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে খামারে একাত্ম হয়ে কাজ করছেন। বর্তমানে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার বেসরকারি ঋণ রয়েছে তার। তিনি অভিযোগ করেন, অনেকে অনেক কিছু পেলেও তিনি এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাননি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক জানান, এত বড় খামারের কথা অমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। এটা আমার প্রতিষ্ঠানের গর্ব। দ্রুত খামার পরিদর্শন করে সার্বিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।