১৮৮৮ সালে স্থাপিত রাজা সূর্য কুমার ইনষ্টিটিউশন (আর. এস. কে) স্কুল। ১৩২ বছরের রাজবাড়ীর সবচেয়ে পুরাতন এই ঐতিহ্যবাহী স্কুলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে আজ অবধি পর্যন্ত এই প্রথম প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত করা হয়েছে।
১৯জুন বুধবার দিনব্যাপী ওই স্কুলের মাঠ প্রাঙ্গনে ঈদ পরবর্তী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের লেখা গানের কথায় অনুষ্ঠানের সবার কন্ঠে ছিলো একই সুর ছিল, ‘আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয়’।
বেলা ১১টায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু হয়। প্রাক্তন ছাত্ররা শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা গান আবৃত্তি নাচে সারাক্ষন হৈ হুল্লোরে মাতিয়ে রাখেন প্রানের স্কুলের প্রাঙ্গণ। প্রথমে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা স্কুল পড়াশোনার সময়ের স্মৃতিচারন করেন এবং বন্ধুবান্ধব পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এই স্কুলের অনেক প্রতিভাবান ছাত্ররা একত্রিত হয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়।
রাজা সূর্য কুমার ইনষ্টিটিউশন (আর. এস. কে) আয়োজনে ও রাজা সূর্য কুমার ইনষ্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক এর সমন্বয়ে ১৯৭৮ ব্যাচ ও সরকারি কামরুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক (অব.) মো. আনিছুর রহমান খোকন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন,রাজবাড়ী -১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয় সম্পর্কীত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী এমপি বলেন, রাজা সূর্য কুমার ইনষ্টিটিউশন রাজবাড়ী জেলার শ্রেষ্ঠ স্কুল। আমার জানা মতে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মধ্যে কয়েকবা শ্রেষ্ঠ স্কুল হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। আবারও চেষ্টা করে যেতে হবে যাতে পুনরায় শ্রেষ্ঠত্ব কেড়ে নিতে হবে। আমি সব সময় এই স্কুলের পাশে আছি। শিক্ষকের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের প্রচেষ্টার ঘাটতি যেন না হয়। ছাত্রদের মান উন্নয়ন করতে হবে। একটি স্কুলের ভালো শিক্ষার্থী তৈরি হলে ঐ অঞ্চলের মান বৃদ্ধি হয়। শুধু শিক্ষক নয় প্রত্যেক অভিভাবকেরও নিজ সন্তানের প্রতি যতœশীল হওয়ার জন্য বলা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ. পিপিএম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহুয়া শারমিন ফাতেমা (শিক্ষা), রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. আলমগীর শেখ তিতু, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা, রেডিয়েশন আনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রকিব উদ্দিন আহমেদ, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আরবান আলী, পরিচালনা পরিষদের সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতা রাজা সুর্যকুমার। রাজা সূর্য কুমার ছিলের বাংলাদেশের রাজবাড়ী অঞ্চলের একজন জমিদার। তার পিতামহ প্রভুরাম নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজকর্মী ছিলেন। পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের জয়ের পর তিনি লক্ষ্মীকোলে এসে আত্মগোপন করেন।
পরে তার পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এই অঞ্চলে জমিদারি গড়ে তোলেন। তারই পুত্র রাজা সূর্যকুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি পান।
বিভিন্ন তথ্য সূত্র থেকে জানা যায় এই অঞ্চলের শিক্ষা প্রসারে এই বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে আজ অবদি। ১৯৫২ সালের শিক্ষার্থীদের সাথে ২০২৪ সালের নবীন শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত এই আয়োজনের শেষ পর্বে ছিল স্মৃতি চারণ এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম ও রুবেল।