রাজবাড়ীতে প্রথম আলো বন্ধুসভার উদ্যোগে শনিবার বিকেলে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। শহরের প্রধান সড়কের রেলগেট শহীদ স্মৃতিচত্বর এলাকায় ২ নম্বর পৌর মিলেনিয়াম মার্কেটে সংগঠনের কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলো রাজবাড়ী বন্ধুসভার সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলো’র রাজবাড়ী প্রতিনিধি এজাজ আহম্মেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বন্ধুসভার সহসভাপতি চৌধুরী ইমরুল আহমেদ তুহিন, কবি নেহাল আহমেদ, বন্ধুসভার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মহসিন মৃধা। সংগীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল জব্বার, বন্ধুসভার পাঠাগার ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক অর্পনা চক্রবর্তী, পরিবেশ ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা বেবী, বন্ধু সামছুল ইসলাম, ইউনুস আলী প্রমূখ। কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন কবি নেহাল আহমেদ ও অর্দীপ শচী। তবলায় সহযোগিতা করেন হেলাল উদ্দিন।
বক্তারা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের মননে মিশে আছে। আমরা প্রতিদিন প্রাত্যহিক জীবনে, সুখে-দুঃখে, হাসি-কান্নায়, আনন্দে-বিরহে সবসময় স্মরণ করি। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা দার্শনিক অমর্ত্য সেন রবীন্দ্রনাথকে এক হিমালয়প্রতিম ব্যক্তিত্ব ও গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক ও বহুমাত্রিক সমসাময়িক দার্শনিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথকে ভারতের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি হিসেবেও বর্ণনা করা হয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পঁচিশে বৈশাখ” ও প্রয়াণবার্ষিকী বাইশে শ্রাবণ আজও বাঙালি সমাজে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়ে থাকে।
আর নজরুল আমাদের চেতনায় মিশে রয়েছে। যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকার সঙ্গে সঙ্গে প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তাঁর কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ।