শহিদুল ইসলাম : সে এক অভাবী মানুষের সাদামাটা গল্প। রংরস নেই শৈল্পিক কোন আলপনা নেই। ক্ষুধা ও দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে কোনমতো বেঁচে থাকার গল্প। নাম নিলয়। বাবার ছোট এক বাতাসা দোকানের সহযোগী হিসেবে কাজ করে নিলয়। এরই মাঝে স্কুলেও যেতে হতো। কাজের ফাঁকে পড়তো । সেই চর্চাতেই নিলয় ৫ম শ্রেণি পাশ করে। বৃত্তি পায় ট্যালেন্টপুলে। এরপর ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস, এইচএসসি একই ফলাফল। এভাবেই দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠে নিলয়। এবার আরো একধাপ উপরে ওঠার বাসনা। কিন্তু দারিদ্রতার কষাঘাত এবার তাকে মুচড়ে ধরছে। তার সামনে এগিয়ে যাওয়া যেন দু:স্বপ্ন।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া বাজারে নিলয়দের বাড়ী । পিতার নাম নব নন্দী। মায়ের নাম মাধবী নন্দী। এই নন্দী দম্পত্তির ৩ ছেলেমেয়ের মধ্যে নিলয় ২য়। এবছর কালুখালী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান শাখা থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এইচএসসি পাশ করেছে নিলয়। তার স্বপ্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শিখে বড় হবার। কিন্তু খরচ অনেক। তাছাড়া ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যও করতে হয় আলাদা কোর্স। এসব যোগান দেওয়া নন্দী পরিবারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। কারন তাদের নুন আনতে পানতা ফুরায়। কি করে এই পরিবার নিলয়ের উচ্চ শিক্ষার খরচ যোগাবে?
নিলয় জানায়, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময় তাকে টিউশন করে নিজের খরচ যোগাতে হতো। বাবার দোকানে বেঁচাকেনা কম হলে তাদের না খেয়ে রাত কাটাতে হতো। এভাবে কষ্টের মধ্য দিয়ে তাকে বড় হতে হয়েছে। কিন্তু এবার তো অন্যরকম যুদ্ধ। মেধার সাথে টাকারও জোর থাকা চাই। কোথায় পাবো এতো টাকা ? সেই ভাবনা আর হতাশ জীবনের মাঝেও উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখছে নিলয়। যদি কেউ হাতটি ধরে !