সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরিক্ষায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় বাল্যবিয়ে ও দারিদ্র্য তার কারণে ঝরে পড়েছে ৪১ জন শিক্ষার্থী। ফরম পূরন করার পরও তারা পরীক্ষা দিতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেয়েদের অধিকাংশই বাল্য বিয়ের শিকার হওয়ায় এবং ছেলেরা দারিদ্রতার কারণে সংসারের হাল ধরতে কাজে চলে যাওয়ায় পরিক্ষা দিতে পারেনি।
পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এসএসসি পরিক্ষায় ১ হাজার ১৫৮ জন পরিক্ষার্থী ছিল। তবে এর মধ্যে ২০ জন ছাত্রী এবং ৭ জন ছাত্র পরিক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। জনের মধ্যে ৮ জন ছাত্রী ও ৪ জন ছাত্র অনুপস্থিত থাকে। দৌলতদিয়া আক্কাস আলী হাইস্কুলের এসএসসি পরিক্ষার্থী মৌসুমি আক্তার জানান, তার বান্ধবী যুথি আক্তারের পরিক্ষার কিছুদিন আগে বিয়ে হয়ে যায়। এ কারণে সে পরিক্ষা দিতে পারেনি। তার বর ফরিদপুর জাজ কোর্টে চাকরি করে। জামতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জোহানা আক্তার জানান, তাদের সহপাঠী সখিনার বাবা দরিদ্র রিক্সাচালক। পরিক্ষার মাত্র এক মাস আগে তার বিয়ে হয়ে যায়। দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম জানান, তার স্কুলের একটি মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এসএসসি পরিক্ষা দিতে পারেনি। আমরা এসব ক্ষেত্রে সচেতনতাধর্মী কাজ করে থাকি। তবে শতভাগ সফল হওয়া কঠিন। এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করা জরুরি।
গোয়ালন্দ নাজির উদ্দিন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এসএসসি কেন্দ্রের সচিব মিজানুর রহমান বলেন, তার কেন্দ্রে মোট পরিক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে বিভিন্ন স্কুলের ২০ জন মেয়ে ও ৭ জন ছেলে অনুপস্থিত থাকে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মেয়েদের অধিকাংশের বাল্য বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং ছেলেরা সংসারে অভাব-অনটনের কারণে কাজে যোগ দিয়ে এলাকার বাইরে চলে গেছে।
এসএসসি’র ফরম পূরন করেও পরীক্ষা না দিয়ে তাদের এভাবে ঝরে পড়াটা খুবই দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।