রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন

গোয়ালন্দে নূরাল পাগলের মাজারে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ জনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৫০ Time View

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নূরুল হক ওরফে নূরাল পাগলের মাজারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে তৌহিদী জনতা। এসময় কবর থেকে মরদেহ তুলেও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নামাজ শেষে বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে মাজার এলাকায় প্রবেশ করে। প্রথমে মাজারের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জনতার উপস্থিতিতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, জীবদ্দশায় নূরাল পাগল নিজেকে ‘ইমাম মেহেদী’ দাবি করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ২৩ আগস্ট মৃত্যুর পর তাঁকে গোয়ালন্দ দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে প্রায় ১২ ফুট উঁচু বেদিতে দাফন করা হয়। বিষয়টি ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী উল্লেখ করে শুরু থেকেই তৌহিদী মুসল্লিরা এর বিরোধিতা করে আসছিলেন।

এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি হুঁশিয়ারি দেয়— ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কবর স্বাভাবিক অবস্থায় না আনলে ১২ সেপ্টেম্বর “মার্চ ফর গোয়ালন্দ” কর্মসূচির মাধ্যমে কবর গুড়িয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ৫ সেপ্টেম্বর জেলার পাঁচ উপজেলার মুসল্লিদের নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণাও দেওয়া হয়।

এদিকে শুক্রবার সকাল ১১টায় মাজার কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন কবর নিচু করা, দেয়ালের রঙ পরিবর্তন ও সাইনবোর্ড সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা মাজার পরিদর্শন করেন এবং দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানান। এসময় তিনি ঘোষণা দেন— ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’সহ পরবর্তী কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু জুমার নামাজের পরপরই বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা পরিকল্পিতভাবে মাজারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেয়। এর আগে গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যদের গাড়িতেও হামলা চালায় তারা।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান জানান, “আমাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে জনতা বাড়ি ও দরবারে হামলা চালিয়েছে, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এসময় আমার গাড়িসহ পুলিশের দুইটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।” তিনি জানান, আহতের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়নি। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং পরিস্থিতি থমথমে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “এমন একটি ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবিনি। উভয় পক্ষের সাথে একাধিকবার বৈঠক করে সমাধান করা হয়েছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই আমরা হামলার শিকার হই।” এসময় তিনি ও রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিবসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। বর্তমানে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. শরিফুল ইসলাম জানান, “এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ২২ জন আহত রোগী এসেছে। এর মধ্যে তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত ১৯ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto kaskustoto