আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা গৌরবের এক অনন্য দিন। এ দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে গর্জে উঠেছিল উত্তাল জনসমুদ্র। বঙ্গবন্ধু সেদিন শুধু স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহ্বান দেননি, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখাও দিয়েছিলেন। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” বঙ্গবন্ধুর সে আহ্বানই ছিল নয় মাসব্যাপী বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা ও মূলভিত্তি।
প্রায় উনিশ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের পুরো ক্যানভাস তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লাল-সবুজ পতাকাকে মূর্তিমান করে তোলে। বাঙালির ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধু সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির উদ্দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের রণকৌশল প্রদান করেন। সেদিন সারাবাংলার স্বাধীনতা-পাগল মানুষের ঢলে রেসকোর্স ময়দানের চতুর্দিকে জনবিস্ফোরণ ঘটে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে নারী-পুরুষের স্রোতে তিল ধারণেরও জায়গা ছিল না।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির জীবনে অসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। এ ভাষণকে ইউনেস্কো ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এমন একটি ভাষণ যা যুগের পর যুগ বছরের পর বছর, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেজে চলেছে, কিন্তু এর আবেদন এতটুকুও কমেনি। যখনই প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ ঐতিহাসিক ভাষণটি শোনে, তখনই তাদের মানসপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতা সংগ্রামের মুহূর্তগুলো এবং তারা আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের মহান আদর্শে।
বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হবো।
সময় এসেছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দলমত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা একসাথে কাজ করবো-এ হোক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়।
জয় বাংলা।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আবু কায়সার খান
জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ী।