সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

পজিটিভ বাংলাদেশ উন্নয়নের ছোয়ায় বদলে গেছে বালিয়াকান্দি উপজেলার চিত্র

সনজিৎ কুমার দাস, বালিয়াকান্দি ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২২০ Time View

সারা দেশে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতেও। এখন উপজেলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। আর এ বিদ্যুতের কারনে ডিজিটাল করা সম্ভব হয়েছে। ঘরে বসেই হাতের মুঠোয় মিলছে বিশ্বের সব খবর। চলছে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া। এমনকি ইন্টারনেটের সাহায্যে চলছে জন্ম- মৃত্যু সনদ, স্বাস্থ্য সেবা, আর্থিক হিসাব, জমিসংক্রান্ত সেবা, থানার সাধারণ ডাইরী সহ অধিকাংশ কাজ। জানা যাচ্ছে অপরাধীসহ সকল মানুষের অবস্থান।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রদান করা হয়েছে ল্যাপটপ। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। এরই সুফল পাওয়া গেছে করোনা মহামারীর সময়ে। এ সময়ে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে বালিয়াকান্দির শিক্ষকেরা দেশের মধ্যে অবস্থান করে নিয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে থানার পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যা, ডাকাতি, চুরি ও মোবাইলে প্রতারণার আসামী গ্রেফতার করতে দেখা গেছে। রাজবাড়ী-২ আসনের সাংসদ জিল্লুল হাকিম ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপজেলার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের গতি আরও বেড়েছে।

গৃহহীনদের গৃহ প্রদান ঃ জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল কেউ গাছ তলায় থাকবে না। তার এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যে উপজেলায় ৫০১ গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ২০টি ঘর নির্মানের প্রস্তুতি চলছে। এসব ঘরে অবস্থান করছে এতিফোন বিবি (৫০), বিউটি বেগম(৪০), মনোয়ারা বেগম(৬০), দৃষ্টি প্রতিবন্ধি (অন্ধ) সাহিদা(৫০) এর মত নাগরিক। এসকল ঘরে ব্যয় হয়েছে দুই হতে আড়াই লক্ষ টাকা।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষায় ৩০টি বীর নিবাস তেরী করা হয়েছে। প্রতিটি বীর নিবাসে খরচ হয়েছে ১৪/১৫ লক্ষ টাকা।
খাদ্য সহায়তাঃ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রতিমাসে ২ হাজার দুস্থ পরিবারে ৩০ কেজি করে চাল বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। প্রতি মাসে ৭ হাজার ৯শ পরিবারের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি প্রদান করা হয়। প্রতি মাসের ২২ দিন প্রতিদিন ২ হাজার কেজি চাল ২টি ওএম এস ডিলারের মাধ্যমে ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল প্রদান করা হয। এছাড়াও টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল, চিনি বিক্রি করা হচ্ছে।

শিক্ষাঃ শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান এমপিও ও জাতীয করণে ঘাটতি নেই। নতুন করে প্রতিষ্ঠান তৈরীর বাস্তবতা নেই বললেই ভুল হবে না। স্কুল কলেজে নির্মাণ করা হচ্ছে ২-৪ তলা নান্দনিক ভবন। নতুন প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ১৫ কোটি ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে শেখ কামাল সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ। কার্যক্রম শুরুতেই শিক্ষার্থী ৫শ ।
স্বাস্থ্যঃ এ সরকারের আমলে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নত করা হয়েছে। এখানে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স সহ যথেষ্ট জনবল রয়েছে। উপজেলায় ১৯ টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেবার লক্ষে। হাসপাতালে চলছে সিজারিয়ান ব্যবস্থা। মোবাইলে নেওয়া যাচ্ছে চিকিৎসা পরামর্শ। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন শৃংখলার সাথে সম্পন্ন হচ্ছে। আজকের শিশু আগামির ভবিষ্যৎ এ লক্ষে দরিদ্র গর্ভবতী মায়ের ৩ বছরের ভাতা প্রদানের আওতায় বিগত ৬ মাসে ভাতা পেয়েছে ৫৩২ জন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনঃ ২০১৭ সালের শেষের দিকে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বালিয়াকান্দিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের উদ্বোধন করেন। এ পর্যন্ত ২৩৮টি অগ্নি কান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৪২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। কর্মীরা ক্ষতির হাত হতে রক্ষা করতে পেরেছে ৮ কোটি টাকার সম্পদ।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ঃ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ী হিসেবে গড়ে তুলতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী “একটি বাড়ী একটি খামার” প্রকল্প গ্রহণ করে । সেই প্রকল্পটি বর্তমানে সরকারি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে পরিচিত। বর্তমানে বালিয়াকান্দি শাখায় ২১৫টি সমিতিতে সদস্য সংখ্যা ৯ হাজার ১শ ২৭ জন। ঋন বিতরন ৪৯ কোটি ৭০ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা।

কৃষকের সহায়তা ঃ এবছর বালিয়াকান্দি কৃষি বিভাগ ৮৬ জন কৃষককে ভর্তুকি মূল্যে পাওয়ার টিলার প্রদান করেছে। ৩ হাজার কৃষককে দিয়েছে বিনা মূল্যের বীজ ও সার । উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি ফসলের উপর নেওয়া হয়েছে প্রর্দশনী প্লট।
অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্প ঃ এ উপজেলায় অতি দরিদ্র শ্রমিকের প্রতি বছর প্রায় এক হাজার শ্রমিকের ৮০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রদান করেছে বর্তমান সরকার। মাথাপিছু মজুরি ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ঃ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বালিয়াকান্দি উপজেলায় অসংখ্য সড়ক, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মান করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বড় ব্রীজের মধ্যে চন্দনা নদীর উপর পাইককান্দি, খালকুলা, পূর্বমৌকুড়ী,তেতুলিয়া বাড়াদী, সোনাপুর, হড়াই নদী, চত্রানদী, ফুসশলী নদী, গজার গাড়ার নাম রয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য স্লুইস গেট। নারুয়া ঘাটে গড়াই নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। অধিকাংশ মানুষের বাড়ীর সামনে দিয়ে চলে গেছে রাস্তা । সহজেই কৃষক তার উৎপাদিত ফসল বাজার জাত করতে পারছে। একারণেই গ্রাম কেন্দ্রিক বাজার গড়ে উঠেছে। বালিয়াকান্দি উপজেলার মধ্যে ৪টি রেল ষ্টেশন রয়েছে। নিরাপদে অল্প সময়ে কম অর্থ খরচ করে দূরে যেতে পারছে। সড়কপথে এখানকার উৎপাদিত কাঁচামাল প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

অবকাঠামো উন্নয়ন ঃ উপজেলা পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কৃষি অফিস, শিক্ষা অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা ভবন, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির নির্মাণ সবই এ সরকারের অবদান।

বালিয়াকান্দিবাসী মাছ, মাংস, ডিম, দুধ প্রাপ্তিতে বর্তমান সরকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এক সময়ে জাতীয় মাছ ইলিশের দেখা মিলতো না। আজ সেই ইলিশই সব সময় বাজারে পাওয়া যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com