রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মুরাদ সরদার (১৮)নামে এক যুবকের ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। তার এ মৃত্যু নিপা ভাইরাস জনিত কারণে বলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে মারা যায়। মৃত মুরাদ সরদার উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের মাছ ব্যাবসায়ী আবুল সরদারের ছেলে। সে ২০২২ সালে এফকে টেকনিক এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ থেকে ভোকেশনাল এসএসসি ভোকেশনাল পাশ করে কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। প্রচন্ড জ্বর, মাথা ব্যাথা, বমি,পাতলা পায়খানাসহ বেশ কিছু সমস্যার কারনে তাকে বুধবার গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল।
কয়েকদিন আগে বন্ধুদের সাথে মিলে খেজুর গাছের কাঁচা রস পান করায় স্থানীয়দের ধারনা সে নিপা ভাইরাসজনিত কারণে মারা গেছে। তার বেশ কিছু বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন না বুঝেই এ মৃত্যুকে নিপা ভাইরাস জনিত বলে ফেসবুকে প্রচারনা চালায়। এতে করে জনমনে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। রাতারাতি পোস্ট ব্যাপক ভাইরাল হয়।
মুরাদের চাচাতো ভাই স্কুল শিক্ষক আবুল কাশেম ও রেজাউল হক জানান, মুরাদ গত ৪/৫ দিন ধরে জ্বরসহ অন্যান্য সমস্যায় ভুগছিল। এ জন্য বাজারের হাতুরে ডাক্তারের কাছ থেকে এন্টিবায়োটিক নিয়ে সেবন করে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার সকালের দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে অবস্হার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তারা আরো বলেন, মুরাদ ১০/১২ দিন আগে কয়েকজন বন্ধুর সাথে খেজুর গাছের কাঁচা রস খেয়েছিল সত্য। কিন্তু নিপা ভাইরাস হলে তো অন্য বন্ধুদেরও হওয়ার কথা। চিকিৎসক ব্রেইন ষ্ট্রোক বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লিখেছে। তবে মৃত্যুর আগে সেখানে মুরাদের ব্লাড স্যাম্পল নিলেও তার রিপোর্ট আমরা এখনো হাতে পাইনি।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ্ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, সুনির্দিষ্ট পরিক্ষা -নিরীক্ষা ছাড়া কোন লক্ষণ দেখে নিপা ভাইরাসের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় না। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের সকলকে বরং আরো সচেতন হওয়া দরকার।