শুদ্ধ ভোজ্য তেলের চাহিদাপূরনে ব্যাপক ভাবে তৈল জাতীয় ফসল সরিষা আবাদে ঝুকছে কৃষক। এ বছর রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণের বেশী সরিষার আবাদ করেছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বাংলার মানুষ যে পরিমাণ তেল খায় তার ৯০ভাগ ভোজ্য তেল বিদেশ হতে আমদানী করতে হয়। আর সে তেলের শুদ্ধতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। তারই আলোকে বর্তমান সরকারের নির্দেশনা ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো। সেই সাথে প্রনোদনার ব্যবস্থারও কমতি রাখেনি। সে নির্দেশনা অনুযায়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের কৃষক ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সরিষার আবাদে মাতোয়ারা। অধিক মূল্যে ভেজাল তেল কিনে জীবনের ঝুকি আর নিবেনা তারা। নিজেরাই উৎপাদন করে নির্ভেজাল তেলের চাহিদা পূরনে উঠেপরে লেগেছে । অন্যান্য ফসলের আবাদ ঠিক রেখে স্বল্প জীবনকালে অধিক ফলনের দিকে অগ্রসর কৃষক। এ বছর প্রতি কৃষক স্বল্প করে হলেও সরিষার আবাদ করেছে। যা লুকাবার নয়। রাস্তায় চলতে ফিরতে হলুদ রংয়ের মাধুরী মিশিয়ে জানান দিচ্ছে আমাকে ক্যামেরায় বন্দি করে রাখার জন্যে।
ইসলামপুর ইউনিয়নের হুলাইল গ্রামের ইমরান খান জানান, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ি ৩ একর জমিতে বারী-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছে।এর জীবন কাল ৭৫-৮০দিন। ১ বিঘা জমির সরিষা ৭দিনের মধ্যে কাটা যাবে। ফলন ভাল হবে। সরিষা কাটার পর পেঁয়াজ লাগাবে। বর্তমানে প্রতি কেজি সরিষা ১শ টাকার অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে। সরিষা আবাদের মহৌষধি মধুর উৎপাদন নির্ভর করে। প্রতিকেজি মধুর বাজার মূল্য প্রায় হাজার টাকা।
জামালপুর ইউনিয়নের বাধুলী খালকুলা গ্রামের কৃষক মুকুল সর্দার জানান, ২ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। সারা বছর তেলের চাহিদা পূরন করে অতিরিক্ত বিক্রি করা সম্বব হবে। সরিষা তোলার পর পাট বোপন করবে। এছাড়া সরিষার খৈল পান বরজের জন্য খুবই উপযোগী। একই ইউনিয়নের তুলশী বরাট গ্রামের পরিমল চাকী জানালেন সরিষার মধ্যে রকেট সরিষার ফলন সবচেয়ে বেশী। কিন্তু গাছের জীবনকাল বেশীদিন। গাছের উচ্চতা ৭/৮ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। জ¦ালানীর একটা বড় অংশ এর গাছ হতে পূরন হয়। সে দুধরনের সরিষার আবাদ করেছে।
বহরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের সুধাংশ বিশ্বাস ৪ বিঘা জমিতে বারী-১৪ সরিষা আবাদ করেছে। এই সরিষার মত স্বল্প জীবন কালের উচ্চ ফলনশীল অন্যান্য ফসলের বীজের ব্যবস্থা হলে প্রতিবছর তাদের মাঠে ৪টি ফসল ফলানো সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর সরকার ২০-২৫ হাজার কোটি টাকা ভোজ্যতেল আমদানীতেব্যয় করছে। এ ব্যয় হ্রাস করতে ৪০ভাগ সরিষার উৎপাদন বাড়াতে ত্রিবার্ষিকী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জিত হলে ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো বিদেশ হতে আমদানী নির্ভর কমাতে স্বল্প জীবন কালের উচ্চফলনশীল ফসল উৎপাদন করা। যাতে করে এক জমিতে ৩ এর অধিক ফসল ফলানো সম্ভব। সেই লক্ষ্যেই এ বছর সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩শ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৬৫০ হেক্টর। আগামী মৌসুমে ব্রি ধান -৭৫, বীনা-৭,বীনা-১৭, হ্ইাব্রিডধানী গোল্ড, হীরা এজেড-৭০০৬ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।