শফিকুল ইসলাম শামীম॥
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে উভয় ফেরি ঘাটে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের দীর্ঘ একাধিক সারি রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের ৫কিঃমিঃ পন্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী পরিবহন ও প্রাইভেটকার-মাক্রোবাসের দুইটি সারি রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমনি চিত্র। বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দর অফিস সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ১০টি রোরো (বড়), ৫টি ইউটিলিটি (ছোট), ২টি টানা ও ১টি মাঝারী সহ মোট ১৮টি ফেরি সচল রয়েছে। ১টি রোরো (বড়) ফেরি ডা. গোলাম মওলা ও ১টি ইউটিলিটি (ছোট) শাপলা-শালুক ফেরি বিকল হয়ে পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা (মধুমতিতে) মেরামত করা হচ্ছে।
এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে হঠাৎ ফেরির সংখ্যা কমে যাওয়া এবং দৌলতদিয়া পারে ৩টি ঘাট বিকল থাকা ও নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত ফেরি পারাপারে বিঘিœত হচ্ছে। এতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার উভয় ফেরি ঘাটে পন্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের দীর্ঘসারি হচ্ছে। এতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। লোকসান গুনতে হচ্ছে সাধারণ ব্যবসায়ীদের। যশোর থেকে ঢাকাগামী যাত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে ৪ঘণ্টা যাবৎ বসে আছি। প্রচন্ড গরম অপেক্ষা করে শিশু বাচ্চা নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যানজটের একটা মাত্রা আছে। কিন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের যানজটের কোন মাত্রা নেই। কি কারণে প্রতিনিয়ত এমন দুর্ভোগ আমরা কেউ বলতে পারবো না।
ঝর্না আক্তার (৫৫) নামের এক নারী যাত্রী বলেন, গাড়ীর মধ্যে একটি জায়গায় ৩/৪ ঘণ্টা যাবৎ অপেক্ষায় আছি। কিন্ত গাড়ীর চাক্কা ঘুরে না। কখন ঘুরবে কেউ বলতে পারছে না। তিনি বলেন, রাস্তায় পাবলিক টয়লেট (শৌচাগার) নেই। দৌলতদিয়া ঘাটে থাকলেও ২/৩ কিঃমিঃ পায়ে হেঁটে এসে যেতে হচ্ছে। এই ফেরি ঘাটের দুর্ভোগের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
পণ্যবাহী ট্রাক চালক রমজান আলী বলেন, সিটে বসে সারারাত কাঁটাতে হয়েছে। দিন শেষ হয়ে গেল এই সিটে বসে আছি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। বাধ্য হয়ে ঘুম চোখে নিয়ে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ফেরি ঘাটে দুর্ভোগও রয়েছে। টাকাও অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। আমরা উভয় সংকটে প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি ঘাট পারাপার হয়ে থাকি। বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের সহকারী পরিচালক খালেদ নেওয়াজ জানান, ফেরি সংকট ও নদীতে নাব্যতা সংকট এবং নদী পানির গভীরতা কমে যাওয়ার কারণে ফেরি চলাচলে বিঘিœত হচ্ছে। এদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে কিছু যানবাহন প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করার কারণে এই নৌরুটে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহের মধ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের যানবাহন ফেরি পারাপারে স্বাভাবিক হবে।