রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বাদিপক্ষের মারপিটে মো. আব্দুল লতিফ শেখ (৭৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর চর পাঁচুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কয়েক মাস আগে আব্দুল লতিফ শেখ ও তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস শেখের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন শেখ বাদি হয়ে মামলা করেন। মামলায় আদালত থেকে জামিন নেন আব্দুল লতিফ শেখ ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। কিন্তু মামলার পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে আসামিরা উপস্থিত না হওয়ায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি হয়। এর প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি দল আসামীদের বাড়িতে যান। এসময় গ্রেপ্তারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী আব্দুল লতিফের ভাই ইছাক শেখ ও ভাতিজা সবুজ শেখকে গ্রেপ্তার করেন। আব্দুল লতিফ শেখ বসত ঘর থেকে বের হয়ে পালানো চেষ্টা করেন। এসময় বাদিপক্ষের লোকজন আব্দুল লতিফ শেখকে ধাওয়া দেন। পরে বাড়ি থেকে একটু দূরে আব্দুল লতিফকে আহত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আব্দুল লতিফকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আব্দুল লতিফের স্ত্রী সহিতন বিবি জানান, তার স্বামী সুস্থ শরীরে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে ছিলেন। পুলিশের ভয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় আমার সামনেও ওরা তাকে ধাওয়া দেয়। পরে তাকে ধরে মারপিট করে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
স্থানীয় আক্তার সরদার (৭০) জানান, ঘটনার পর আমিই প্রথমে আহত আব্দুল লতিফের কাছে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি তিনি আহত হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। কিন্তু তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আনোয়ারের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। এসময় তার স্ত্রী রোজিনা বেগম জানান, তারা কোথায় গেছে তিনি জানেন না। তারা কাউকে মারেননি। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে কোন কিছুর সাথে আঘাত পেয়ে অথবা স্ট্রক করে আব্দুল লতিফের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, গ্রেপ্তারী পরোয়ানাভুক্ত দুইজন আসামীকে থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার পর ওখানে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে পুলিশ ওই মৃতব্যাক্তি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।