দীর্ঘ ১৮ বছর পর আগামী ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গোয়ালন্দ বাজার ব্যবসায়ী পরিষদের নির্বাচন।
শেষ মুহূর্তের এ নির্বাচনে প্রার্থী ও সমর্থকরা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের নিজ নিজ পক্ষে প্রচার -প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রার্থীদের নানা ধরনের ব্যানার, পোষ্টার,ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা শহর। নির্বাচন কমিশন ও স্হানীয় প্রশাসনের পক্ষ হতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য করার জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারী গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, নির্বাচনে আমরা এমন ব্যবস্থা নিয়েছি-যেখানে সবাই সবার ভোটের পাহারাদার থাকবে। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে কোন আশংকা থাকবে না।”
এই নির্বাচনে ১৮ টি পদের বিপরীতে ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার সংখ্যা সংখ্যা ১ হাজার ৯৯৯ জন।
সভাপতি পদে বাজারের মোঃ সিদ্দিক মিয়া (প্রতিক চেয়ার), মোশারফ হোসেন (প্রতিক ছাতা), সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম মাহবুবুর রাব্বানী (প্রতিক মোরগ), মোঃ খোকন শেখ (প্রতিক মাছ),সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হাবিবুর রহমান হাবিব (প্রতিক জগ), আজাদ মোল্লা বাবু (প্রতিক টিউবয়েল)সহ অন্যান্য পদে ব্যাবসায়ী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী খোকন শেখ বলেন, ভোট কেন্দ্রে ৮ টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রতি কেন্দ্রে একজন প্রার্থীর জন্য মাত্র একজন পোলিং এজেন্ট দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রার্থীর মধ্যে দ্বিধা কাজ করছে।
অপর সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গোলাম মাহবুবুর রাব্বানী বলেন,আশা করছি প্রচার প্রচারনার মতো ভোটগ্রহনও সুষ্ঠুভাবেই হবে। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার পূর্ণ আস্হা রয়েছে। দীর্ঘদিন বাজার পরিষদের সাথে রয়েছি। ভোটাররা এবার তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সভাপতি পদপ্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, তার বাবা মরহুম মন্জুর আহমেদ গোয়ালন্দ বাজার ব্যবসায়ী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীদের সেবা করেছেন। আমিও বাবার দেখানো পথ ধরে ব্যবসায়ীদের সেবা করতে চাই। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতি বুথে পোলিং এজেন্ট দেয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেছিলাম।কাজ হয়নি। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তবে প্রচার -প্রচারনার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। সবাই আচরন বিধি মেনে নিজেদের মতো করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সভাপতি প্রার্থী মোঃ সিদ্দিক মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাজার পরিষদের বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হয়ে ব্যাবসায়ীদের সেবা করে আসছেন। দীর্ঘকাল নির্বাচন না হলেও করোনাকাল সুখে-দুঃখে সব সময় ব্যাবসায়ীদের পাশেই ছিলেন। আশা করি তারা এবার আমাকে সভাপতি পদে ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগদান অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন,সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কোন সংশয় নেই। এখানে সবাই সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে প্রচার -প্রচারনা চালাচ্ছেন। নির্বাচনও হবে উৎসবমূখর পরিবেশে।
নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট কেন্দ্রে ৮ টি বুথ থাকবে। প্রতি বুথে ৩২ জন প্রার্থীর পক্ষে ৩২ জন করে এজেন্ট থাকলে কেন্দ্রের মধ্যে কারো পা ফেলারও জায়গা থাকবে না। তাই দু’একজন ছাড়া অধিকাংশ প্রার্থী ও প্রশাসনের পরামর্শে প্রত্যেক প্রার্থীর পক্ষ হতে ১ জন করে মোট ৩২ জন এজেন্ট নেয়া হচ্ছে। পরে তাদেরকে ৪ জন করে প্রতি বুথে ভাগ করে দেয়া হবে। এতে সবাই সবার ভোটের পাহারাদার থাকবেন। তাছাড়া প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা নির্বাচন পরিদর্শনে থাকবেন। আশা করি দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা অত্যন্ত সুন্দর ও গ্রহনযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারব।