শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

গোয়ালন্দে ছাত্রলীগের কোন্দল চরমে ॥ পৌর কমিটির ৩ নেতাকে বহিষ্কারের সুপারিশ

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি ॥
  • Update Time : সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২
  • ১৪১ Time View

গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদের ফেস্টুন সরিয়ে সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন হৃদয়ের ফেস্টুন স্থাপনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের মধ্যেকার বিদ্যমান উত্তেজনা আরো বেড়ে গেছে।

এ ঘটনার জের ধরে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মৃদুল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।

১২ জুলাই স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ১৬ জুলাই রাতে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের ফেসবুক আইডি হতে প্রকাশ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. তুহিন দেওয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় স্বাক্ষর করেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ড স্থগিত করে গত ১২ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু তার আগেই উপজেলা ছাত্রলীগের এমন সিদ্ধান্ত প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় বলেন, গত ৯ জুলাই রাত ৯ টার দিকে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রাতুল আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মৃদুল হোসেনের নেতৃত্বে ১২/১৩ জন গোয়ালন্দ বাজারে আমার ব্যাক্তিগত অফিসে হামলা করে। এ সময় তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও অফিসের চেয়ার-টেবিল,আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

এ বিষয়ে গত ১০ জুলাই গোয়ালন্দ ঘাট থানায় আমি তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি।

এ ঘটনার জন্য গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের তদন্ত কমিটি গঠনের আগেই আমি ও সভাপতি তুহিন দেওয়ান মিলে জরুরি ভিত্তিতে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মৃদুল হোসেনকে তাদের উপজেলা ছাত্রলীগের দলীয় সাধারণ সদস্য পদ হতে সাময়িক বহিষ্কার করি এবং স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট সুপারিশ করি। যা কিছুটা বিলম্বে প্রকাশ করা হয়। জেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় উপজেলা কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ বলেন, মিথ্যা মামলা দেয়ার পর তারা কোন ধরনের সভা না করে অন্যায়ভাবে আমাদের বহিষ্কার করলো। যেটা সম্পূর্ণভাবে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী হয়েছে । আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না। আমাদের সমস্যা নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ গত ১২ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কাজ চলমান থাকায় এবং তারা ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ড স্থগিত করায় আমরা কোন ধরনের কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। অথচ উপজেলা ছাত্রলীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগকে উপেক্ষা করে একের পর এক কর্মকান্ড করে চলেছে। এতে করে ছাত্রলীগের সাধারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

তিনি দাবি করেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।
এদিকে উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের উভয় কমিটির মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এমন জটিল পরিস্থিতিতে উভয় কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এরশাদ বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির কোন সদস্যকে ওই কমিটি বা কমিটির সভাপতি -সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে জেলা কমিটির মাধ্যমে কোন সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে গেলে কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন। কিন্তু গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগ এ ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ছাত্রলীগের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ হতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৩ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বলে ফেসবুকের মাধ্যমে জানলাম। বিষয়টি দুঃখজনক। তাছাড়া এ ক্ষেত্রে তারা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির কোন সভাও করেনি বলে শুনলাম। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এ সিদ্ধান্তে ছাত্রলীগের মধ্যে অস্থিতিশীলতা আরো বেড়ে যেতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com