ই-কমার্স ব্যবসা জেকাবাজার লিমিটেড রাজবাড়ীসহ প্রতিবেশি বিভিন্ন জেলার ২০ হাজারের মতো গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মূলহোতা জাবিউল্লাহ খান জাবেরকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। শনিবার বিকেলে ফরিদপুর জেলার আলীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার জাবিউল্লাহ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তিনি জেকাবাজার লিমিটেড নামের কথিত ই-কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্বে রয়েছেন।
রাজবাড়ী জেলা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক জিল্লুর রহমান জাবেরের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২ নভেম্বর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনার দায়ে জেকাবাজার লিমিটেডকে সিলগালা ও ভেজাল পণ্য বিক্রির দায়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে। এরপর থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যবসা চালিয়ে যান মূলহোতা জাবিউল্লাহ জাবের। ওই বছরের ২২ নভেম্বর জেকাবাজারের সব কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় জাবেরসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন জেকা বাজার লিমিটেডের ব্যবসায়িক অংশীদার শুকুর আলী (৬০), মিলন প্রামাণিক (৩৫) ও নায়েব আলী (৪০)। মামলার পর ওই বছরের ২২ নভেম্বর জেকা বাজারের সব কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ নয় মাস পেরিয়ে গেলেও বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাননি গ্রাহকরা। ফলে টাকা ফেরত ও জাবিউল্লাহ খানের বিচারের দাবিতে গ্রাহকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। জেকাবাজার লিমিটেডের মূল কার্যালয় ছিলো রাজবাড়ী জেলা শহরের পান্না চত্বরের নান্নু টাওয়ারে। প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে জাবিউল্লাহর নির্দেশনায় প্রায় ১৫ জন পরিচালকের সমন্বয়ে জেকাবাজার পরিচালিত হতো। গ্রাহকের কাছে ১ হাজার ৩০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হতো প্রতিটি আইডি। জেকাবাজার অ্যাপসের মাধ্যমে ৩০ সেকেন্ডের অ্যাড ভিউ করলে ওই অ্যাকাউন্টে যোগ হতো ১০ টাকা। একটি আইডি থেকে ২৪ ঘণ্টায় একবার ভিউ করতে পারতেন গ্রাহকরা। অ্যাড ভিউ ছাড়া নতুন গ্রাহক বাড়ালে অ্যাকাউন্টে টাকা যোগ হতো। একেকজন গ্রাহকের পাঁচশোরও বেশি আইডি ছিলো বলে জানা যায়।
প্রতারক জাবিউল্লাহকে তার বাবা কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন।