রাজবাড়ীতে উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বাজার দর বেশি, খরচ কম ও ফলন ভালো হওয়ায় এসব উচ্চ ফলনশীল টমেটো আবাদ করে বিঘা প্রতি খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন চাষিরা। পদ্মার উর্বরা পলি মাটিতে টমেটো চাষ করায় সার, ঔষধ ও কীটনাশক কম লাগায় খরচ কম ও টমেটোর আবাদ ও উৎপাদন ভালো হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পদ্মা নদী তীরবর্তী কাচরন্দ গ্রামের মো. লুৎফর মন্ডল এক বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের বাহুবলী ও বিউটিপ্লাস টমেটো আবাদ করেছেন। এক বিঘায় তার সার, ঔষধ, বীজসহ ৪০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। এ জাতের টমেটো আবাদে ফলন বেশি, স¦াদ ও বাজার দর বেশি হওয়ায় তারা বেশি লাভবান হচ্ছেন। তবে বর্তমান বাজার দর আরো কয়েকদিন থাকলে বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। বাজার দর বেশি থাকায় এবছর তাদের লাভও বেশি হচ্ছে বলেন। একই গ্রামের আরেক টমেটো চাষি মো. আলম সরদার। তিনি এবছর উচ্চ ফলনশীল জাতের সাড়ে তিন বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছেন। তার সব খরচ মিলে এক লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে তার টমেটো ক্ষেত ও ফলন ভালো রয়েছে। তিনি আশা করছেন প্রতি কেজি টমেটো দাম কমে ২০/২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে পারওে তিনি ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন। তাদের মত আরো অন্যান্য চাষিরাও এবছর টমেটো আবাদ করে ভালো লাভবান হয়েছেন। এবছর টমেটো আবাদ করে তিনিও ভলো লাভবান হচ্ছেন। জেলা সদরের বরাটের নয়নসুখ, চরবরাট উড়াকান্দাসহ পদ্মার তীরবর্তী এলাকাগুলো এখন টমেটো আবাদে ভরপুর। এছাড়া মিজানপুর, বসন্তপুর, সুলতানপুর, দাদশী গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের দেবগ্রাম ছোট ভাকলা, দৌলতদিয়া, উজানচর ইউনিয়নসহ জেলার এ দুই উপজেলার সবচেয়ে বেশি টমেটো আবাদ হয়েছে। এবছর জেলায় ৬৪৫ হেক্টর টমেটো আবাদ হয়েছে। যার পুরোটাই উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো। গত বছরের চাইতে এবছর ৫০ হেক্টর বেশি টমেটো আবাদ হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলাটি কৃষি নির্ভর একটি উর্বর জেলা হওয়ায় সবধরনের কৃষি পণ্য আবাদ হয়ে থাকে বেশি। এবছর অতি বৃষ্টির কারণে টমেটোর আবাদে কিছুটা বিলম্ব হলেও পদ্মার চরাঞ্চলে উর্বরা পলি মাটিতে টমেটোর আবাদ করে ভালো লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এ উর্বরা পলি মাটিতে টমেটো আবাদ করে সার, ঔষধ ও কীটনাশকের ব্যবহার কম দিতে হচ্ছে। একারণে চাষিদের খরচও কম হয়েছে। এতে তাদের লাভের অংকও বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক গোলাম রসুল বলেন, চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৬৪৫ হেক্টর টমেটো আবাদ হয়েছে। এ জেলায় তিনটি থেকে চারটি জাতের টমেটো বেশি আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাহুবলি, বিউটি প্লাস ও বারী প্লাস টমেটো বেশি আবাদ হয়েছে। এ টমেটো আবাদ করে খরচ কম,উৎপাদন ও স্বাদের দিক দিয়ে ভালো হওয়ায় চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছে। বর্তমানে রাজবাড়ীর টমেটো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।