রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাটে কর্মমুখি মানুষের স্রোত দেখা যায়। তবে জনস্রোত থাকলেও মহাসড়কে যানবাহনের চাপ না থাকায় কর্মমুখি মানুষের দুর্ভোগ কম হচ্ছে। যাত্রীদের চাপ থাকায় অনেক ফেরি যানবাহন না নিয়ে বাধ্য হয়ে শুধু যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এমনি চিত্র।
এসময় কথা হয় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকাগামী খালেদা বেগম (৪৫) নামের এক নারী যাত্রীর সাথে, তিনি বলেন ঈদের আগে বাড়ীতে যাওয়ার সময় দুর্ভোগ মুক্ত হয়ে যেতে পেরেছি। এখন ঢাকায় যাওয়ার পথেও সাতক্ষীরা থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে কোন সমস্যা হয়নি। তবে ফেরি ঘাটে যাত্রীদের চাপ থাকায় অন্য ফেরিতে যাওয়ার জন্য এখানে বসে আছি। তিনি আরও বলেন, ১৫/১৬ বছর যাবৎ ঢাকায় আসা-যাওয়া করছি। তবে পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় এবার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কোন দুর্ভোগ পোহাতে হয় নাই।
মাগুরা থেকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে পরিবার ৩ সদস্য নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন মেহজাবিন খুশি। এসময় মেহজাবিন খুশি বলেন, গত ঈদে প্রাইভেটকার নিয়ে গ্রামের রাস্তায় ৮কিলোমিটার ঘুরে এসেছি। কিন্ত গ্রামের রাস্তায় ৩/৪ ঘণ্টার দুর্ভোগের স্মৃতি সারা জীবন ভুলতে পারবো না। এবার ঘাটে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকলেও উল্লেখ যোগ্য কোন দুর্ভোগ নেই। মহাসড়কে ফেরি পারের অপেক্ষায় যানবাহন না থাকায় সহজে ফেরি ঘাট পর্যন্ত এসেছি। ফেরির টিকিটও ভাল ভাবে নিতে পেরেছি।
যাত্রীবাহী পরিবহন রয়েল এক্সপ্রেস এর এক চালক বলেন, ২০ বছরের অধিক সময় এই রুটে যানবাহন চালাই। কিন্ত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পূর্বে মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া এবং রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে সারা বছর কমপক্ষে ৩/৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও চালকদের কোন প্রকার দুর্ভোগ নেই। কিন্ত ঈদের ছুটি শেষে কর্মমুখি মানুষের চাপ রয়েছে। চাপ থাকলেও এসকল যাত্রীরা সহজে ফেরি পার হয়ে গন্তব্য স্থানে যেতে পারছে। ফেরি ঘাটে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় না।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ঘাটের যাত্রীদের চাপ রয়েছে। তবে দুর্ভোগ নেই। যে সকল যাত্রী লঞ্চ ঘাটে আসছে তারা টিকিট সংগ্রহ করে পাটুরিয়া ঘাটে যেতে পারছে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের পোর্ট অফিসার মো. সাজ্জাদ রহমান জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রীদের চাপ আছে। দুপুরের দিকে একটু বেশি চাপ হয়। তবে এই নৌরুটে স্বার্বক্ষনিক ২০টি লঞ্চ চলাচল করার কারণে কর্মমুখি যাত্রীদের নদী পারাপার করতে কোন সমস্যা হয়নি। তিনি আরও বলেন ঈদের ছুটি শেষে কর্মমুখি মানুষের নদী পারাপার করার জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ্ খালেদ নেওয়াজ জানান, ফেরি ঘাটে কোন দুর্ভোগ নেই তবে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। এই নৌরুটে বর্তমান ১৬টি ছোট বড় ফেরি চলাচল করছে। যানবাহনের চাপ কম থাকায় যাত্রী পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না।