রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভ্যাকসিন সংকটের কারনে বেশ কিছুদিন ধরে করোনার বুষ্টার ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। টিকা গ্রহণে আগ্রহীরা প্রতিদিন টিকা নিতে হাসপাতালে আসছেন। কিন্তু টিকা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মো. ইব্রাহিম টিটন টিকার সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, টিকার প্রয়োজনীয় চাহিদা সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। ২/৩ দিনের মধ্যেই আশা করি টিকা পেয়ে যাব। সেক্ষেত্রে ঈদের ছুটির পর হতে আবারো বুষ্টার ডোজ দেয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, বুষ্টার ডোজের জন্য শুধুমাত্র এ্যাষ্ট্রোজেনিকা এবং ফাইজারের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে এ্যাষ্টোজেনিকার ভ্যাকসিন অনেকদিন ধরে সারা দেশেই নেই। ফাইজারের ভ্যাকসিন দিয়ে রাজবাড়ীতে বুষ্টারের কার্যক্রম চলছিল। সেটাও গত ২ জুলাই পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। ফলে জেলার ৫ টি উপজেলাতেই আপাতত বুষ্টার ডোজের টিকা দেয়া বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বুধবার সরেজমিন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বুষ্টার ডোজের টিকা নিতে এসেছেন অনেকে নারী-পুরুষ। কিন্তু হতাশ হয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন।
এ সময় আলাপকালে স্কুল শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম বুষ্টার ডোজের টিকা নিতে। কিন্তু টিকা কেন্দ্রের লেকজন বলল টিকা নেই।তাই ফিরে যাচ্ছি। আমার মতো আরো অনেকে দূর -দূরান্ত হতে কষ্ট করে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ হতে একটা ঘোষনা থাকলে কাউকে দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
সামিয়া ফারহানা নামের এক গৃহবধূ বলেন, সরকার করোনার টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সফলতা দেখিয়েছেন। বর্তমানে দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। সরকার দ্রুত বুষ্টার ডোজের টিকা গ্রহনসহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। অথচ আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভ্যাকসিন পাচ্ছি না। বুঝতে পারছি না কোথায় সমস্যা হচ্ছে?
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ্ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, লোকজন করোনার বুষ্টার ডোজ নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। আমরা চাহিদার কথা উপরে আগেই জানিয়েছি। আশা করছি ঈদের পর থেকে দেয়া সম্ভব হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ নারগিস খানম বলেন, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী এখানে করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত এ্যাষ্টোজেনিকার ১ম ও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৬৬ হাজার ৯৪২ জনকে। এর মধ্যে বুষ্টার ডোজ নিয়েছেন ১৬ হাজার ১০২ জন। ফাইজারের ১ম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৪৬৭ জন। বুষ্টার ডোজ পেয়েছেন ৫ হাজার ২৪১ জন।
এছাড়া সিনোফার্মার ১ম ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৮৬ হাজার ৭৭৬ জন, সিনোভ্যাকের ৬৬১ জন এবং মডার্নার ৩ হাজার ৬’শ জন। এ তিনটি কোম্পানির টিকার বুষ্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে না।