সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ন

পাংশার গড়াই নদীতে মাঝে মধ্যে ভেসে ওঠে কুমির

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৭ Time View

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কেওয়া গ্রাম এলাকায় গড়াই নদীতে মাঝে মধ্যেই কুমির ভেসে উঠছে। একটি দুটি নয়, তিনটি কুমির দেখেছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। গত দুই মাস ধরে দেখা যাচ্ছে কুমির তিনটি। একারণে এলাকাবাসীর মধ্যে কুমির আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে নদীতে নামার সাহস পাচ্ছে না কেউ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, কেওয়া গ্রামটি তিনটি জেলার সীমান্তবর্তী। একদিকে কুষ্টিয়া, অন্যদিকে ঝিনাইদহ। কেওয়া গ্রামের গড়াই নদীর ঘাট থেকে ঝিনাইদহের খুলুমবাড়ি ঘাটে খেয়া নৌকায় যাওয়া যায়। এ এলাকা থেকে যশোর, ঝিনাইদহ যাওয়ার সহজতম পথ এটিই। গড়াই নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। স্থানীয় জেলেরা এই নদী থেকে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করে। প্রায় দুই মাস আগে হঠাৎ একদিন নদীতে কুমির ভেসে ওঠে। তার পর থেকে মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। যেকারণে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কসবামাজাইল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার তামজীদ হোসেন জানান, গড়াই নদীর এই ঘাটে তিনটি কুমির আছে। তিনি নিজ চোখে দেখেননি। অনেকেই দেখেছে। একটি বড় কুমির আর দুটি ছ্টো কুমির। অনেকে ভিডিও করেও রেখেছে। কুমিরগুলো এখনও মানুষের উপর আক্রমণ করেনি। তবে, কখন কোন বিপদ ঘটিয়ে দেয় বলা মুশকিল। একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কুমিরের কারণে মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় আছে। নদীতে কোথাও কম পানি, কোথাও বেশি। যেখানে কুমির থাকে সেখানে পানি অনেক গভীর। কুমিরের ভয়ে কেউ নদীতে নামতে সাহস পায়না। মগ কেটে গোসল করে। জেলেরা নদীতে মাছ ধরছে আতঙ্ক নিয়ে। কুমির কবে ক্ষতি করে বসে সেটা নিয়ে সবাই চিন্তিত। সাধারণত দুপুর ১টার দিকে কুমির ভেসে ওঠে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, একদিন কুমির কুমির চিৎকার শুনে এগিয়ে যাই। যেতে যেতেই ডুবে যায় কুমিরটি। কিন্তু নদীর যেখানটায় মানুষ কুমির দেখতে পেয়েছে, সেখানে প্রচুর মাছ ভেসে ছিল। এই নদীতে প্রচুর মাছ আছে। কুমির মাছ খেতে পারছে বলে কাউকে কোনো ক্ষতি করছে না অথবা বন্যার সময় এসে যাওয়ার জায়গা না পেয়ে হয়ত এখানেই আছে বলে ধারণা করছেন তারা। তার বয়স ৫০ বছর। এর মধ্যে তিনি কোনোদিন এই নদীতে কুমির দেখেননি। গ্রামের বৃদ্ধ বয়সীরা তাকে জানিয়েছেন বহু আগে নাকি এখানে কুমির ছিল।

কসবাজামাইল ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার মাহমুদ সুফল বলেন, ঘটনাটি সত্য। গড়াই নদীতে কুমির আছে। স্থানীয়রা জাল দিয়ে কুমির ধরতে চেয়েছিল। তিনি নিষেধ করেছেন। যেহেতু এটা বন্য প্রাণি একারণে ওইভাবে ধরা সঠিক হবেনা। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আবু দারদা জানান, বিষয়টি তিনি শুনে সেখানে গিয়েছিলেন। কয়েকটি ভিডিও দেখেছেন। উপজেলা বন বিভাগকে লিখিত ভাবে অবগত করেছেন।

পাংশা উপজেলা বন অফিসের ফরেস্টার মো. আজিজুল হক জানান, গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পাংশা ইউএনও সাহেব বিষয়টি মৌখিকভাবে তাকে জানান। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেন। ইউএনওর চিঠি সংযুক্ত করে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে খুলনা অফিসে যোগাযোগ করেছিলেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আসার পর তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com