যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজবাড়ীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাজবাড়ী শহীদ খুশী রেলওয়ে ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এসময় রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার, স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মল্লিকা দে, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারিফ উল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সকালে রাজবাড়ীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দেখা যায়, শত শত মানুষ দলে দলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংঘ, সংগঠন, আর্থিক, সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হল, ক্লাব, ইউনিয়নের হয়ে কিংবা ব্যক্তি ও পারিবারিকভাবে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। তাঁদের কারও হাতে একগুচ্ছ ফুল, ফুলের তোড়া কিংবা শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের কণ্ঠে সেই বেদনাবিধুর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি।
রক্তঝরা অমর একুশে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায় করতে গিয়ে আত্মদানের গৌরবময় দিন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে এ দেশের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে এক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেন সালাম, জব্বার, রফিক, বরকত, শফিক। তাঁদের রক্তের পথ বেয়ে বাংলা এ দেশের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পায়।
বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগের দিনটির স্বীকৃতি এখন বিশ্বজুড়েই। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেওয়ার পর ইউনেসকো বাংলাদেশের সঙ্গে ২০০০ সাল থেকেই প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করে আসছে। বাঙালির প্রাণের দিবস একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য বহুমাত্রিক। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে ভাষা আন্দোলন। দিনটি এ দেশের মানুষের কাছে আত্মত্যাগ ও জাগরণের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।