রাজবাড়ী জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা যেন হয়ে উঠেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বজন এবং আহতদের ভরসাস্থল হয়ে উঠছেন রাজবাড়ীর নবাগত জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা। জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদানের মাত্র দুই দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর নতুন বাজার এলাকায় শহীদ আব্দুল গণির বাড়িতে গিয়ে শহীদের বিধবা স্ত্রী লাকী আক্তার, শিশু সন্তান জান্নাত আক্তারের সাথে দেখা করেন। উপহার দেন নতুন পোশাক উপহার। এছাড়া শহীদ গণির পরিবারের সদস্যদের জন্যও নিয়ে যান বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ফল ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
বুধবার চরম ব্যস্ততার মাঝেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার ধুলিয়াট গ্রামের রাজীব খান এবং গোয়ালন্দ উপজেলার নলডুপি গ্রামের আব্দুল হক শেখের ছেলে গার্মেন্টস শ্রমিক আমির হামজাকে নিজের অফিসে ডেকে তাঁদের অসুস্থতার খবর নেন। তাঁদের দুর্ভোগের কথা মনযোগ সহকারে শুনেন। জেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দেন।
বৃহস্পতিবার আবার ছুটে গিয়েছিলেন রাজবাড়ীর জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলটাকাপোড়া গ্রামে শহীদ সাগর আহমদের কবর জেয়ারত এবং তাঁর পরিবারের সাথে দেখা করতে। নগদ ২০ হাজার টাকার সরকারি অনুদানও দিলেন এই কৃষক পরিবারকে। শহীদ সাগরের মা গোলাপি বেগমের জন্য শাড়ী, বাবা মো তোফাজ্জল হোসেনের জন্য পাঞ্জাবী এবং বোনের জন্যও নতুন পোশাক নিয়ে যান সাথে উপহার হিসাবে।পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়ে যান বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ফলও।
এ সময় বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসিবুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বারি, সহকারী কমিশনার অংকন পাল ও বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে রাজধানীর মিরপুর গোলচত্বরে গুলিতে শহীদ হন সাগর। তিনি সরকারি বাংলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
শহীদ সাগরের মা গোলাপী বেগম এই প্রতিবেদককে টেলিফোনে বলেন, ডিসি স্যার আজ এসেছিলেন আমাদের বাড়ীতে। উনি আমাদের যে কোন দরকারে উনাকে জানাতে বলেছেন এবং পাশে থাকার ওয়াদা করেছেন।
সাগরে পিতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার ছেলে শহীদ সাগরের কবর জেয়ারত করার সময় আমি পুরো কবরস্থানের চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল করার দাবী জানিয়েছিলাম ডিসি স্যারের কাছে। আমার কথা শুনে জেলা প্রশাসক তৎক্ষণাৎ আমাকে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করতে বলেন এবং বিষয়টি দ্রুত বিবেচনার আশ্বাস দেন।