রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ফারুক সরদার (২৮) নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে এ ঘটনা ঘটে। ফারুক দৌলতদিয়া ইউনিয়নের শহিদ সরদারের ছেলে। তিনি দৌলতদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ফারুকের বন্ধু আলামিন (২১)। সে দৌলতদিয়া শামসু মাষ্টার পাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে। খবর পেয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম সহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত ফারুকের ভাই মনিরুজ্জামান জানান, দুর্গাপূজা শুরুর দিন থেকে দৌলতদিয়া রেলস্টেশনের পাশে মেলা বসেছে। ওই মেলায় জুয়ার আসর বসায় স্থানীয় রিপন ও তার সহযোগীরা। মেলার বিভিন্ন দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদাও তুলছিল তারা। তাদের জুয়ার আসর বসানোর ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করে আসছিল ফারুক। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে রিপনের মুদি দোকানে গিয়ে আবারও রিপনকে চাঁদাবাজি ও জুয়ার আসর বন্ধ করতে বলে ফারুক। এ সময় রিপন ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফারুকের মাথা, পিঠ, দুই পা ও বাম হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত ১১ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মেলার চাঁদা ও জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ফারুক ও রিপনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে দুদিন আগে মারামারি হয়। শনিবার রাতে ফারুক ৪/৫ জন বন্ধু মিলে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর ১ নং গেটে অবস্থান করছিল। এ সময় রিপন (৩০), হুমায়ুন (২৫)সহ ১৫/২০ জন সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে উপস্হিত হয়ে ফারুকের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের ঠেকাতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন।
দৌলতদিয়া বাজার পরিষদের সভাপতি ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহন মন্ডল দাবি করেন, দূর্গাপূজা উপলক্ষে দৌলতদিয়া বাজারের পাশে রেলস্টেশন এলাকায় অল্প কিছু দোকানপাট বসেছে। তবে এবার দোকান মালিকদের সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। কাউকে কোন চাঁদা দিতে হচ্ছে না। পূর্বের শত্রুতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মুহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, রিপন ও ফারুক গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তিনদিন আগে দৌলতদিয়া শহীদ মিনার এলাকায় রিপন ও ফারুকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফারুক কয়েকজন যুবককে নিয়ে যৌনপল্লীতে রিপনের দোকানে গিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে রিপন পাশে থাকা ডাব কাটার ধারালো দা দিয়ে ফারুকের উপর চড়াও হয়। অভিযুক্ত রিপনসহ অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।