রাজবাড়ীতে নিখোঁজের ২ দিন পর মিনহাজুল ইসলাম (১১) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের একটি ধানের ক্ষেত থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের দাবি মিনহাজকে হত্যা করা হয়েছে। মিনহাজুল ইসলাম রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামের আজাদ শেখের ছেলে। মিনহাজ তার বাবা-মায়ের ৪ সন্তানের মধ্যে ২য় ।
স্থানীয় ও পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রবিবার বিকেলে খেলতে যাওয়ার কথা বলে মিনহাজ বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর সে আর বাড়িতে ফেরে না। এলাকায় ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়। সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মিনহাজের মরদেহ পাওয়া গেছে।
মিনহাজের মা খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে রবিবার দুপুরে স্থানীয় মোক্তার সরদারের মালটা বাগানে গিয়ে কয়েকটা মালটা আনে। এরপর তার সাথে থাকা প্রতিবেশি মিনহাজের সমবয়সী সুমন শেখের কাছে কয়টা মালটা ও তার জুতা দিয়ে বলে তুই জুতা আমার বাড়ি তে দিয়ে আয়। কিন্তু সুমন জুতা রেখে আর সেখানে ফেরত যায় না। তারপর থেকেই মিনহাজকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। মোক্তারের বাগান ঘিরে রাখা রয়েছে। সেখানকার প্রবেশপথে তালা দেওয়া থাকে। আমরা গতকাল সোমবার কয়েকবার মোক্তারের বাড়িতে গিয়েছিলাম বাগানের চাবি আনার জন্য। কিন্তু তার কেউ চাবি দেয়নি। আমরা সোমবার বিকেলে তার মালটা বাগানে দেখেছি। কিন্তু সেখানে কোনো লাশ ছিলনা। আজ সেই বাগানের পাশে ধান ক্ষেতে আমার ছেলের লাশ পাওয়া গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোক্তার সরদার টাকা পয়সাওয়ালা মানুষ। ওরা বাজেভাবে আমার ছেলেকে মেরেছে। আমার ছেলের জিহ্বা কেটে ফেলেছে। কারেন্টের আগুন দিয়ে কয়েক জায়গায় পুড়িয়ে ফেলেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।’
সরেজমিনে দেখা যায়, লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে সাধারণ জনতা ভিড় জমিয়েছে। রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করছিল। মিনহাজের মাকে তার বাড়িতে আহাজারি করতে দেখা যায়। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করতে দেখা গেছে।
হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত মোক্তার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়ির ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। বিভিন্ন মাধ্যমে ফোন নাম্বার যোগার করার চেষ্টা করে তার নাম্বার না পাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা এটি একটি হত্যাকান্ড। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেছি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।