রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউপির ৮ নং ওয়ার্ড তোরাপ শেখের পাড়ার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কৃষিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক হুমায়ুন আহমেদ আধুনিক পদ্ধতিতে গাছ আলু চাষে লাভের মুখ দেখছেন। ইতিমধ্যে ফলন আসা শুরু করেছে প্রতিটি গাছে। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ করেছেন গাছ আলু। বেল আলু জাতের এ আলু গাছে ইতিমধ্যে ফলন ধরা শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষমাত্রার চাইতে বেশি আলু পাওয়া যাবে এ আলু গাছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক হুমায়ুন আহমেদ ৫০ শতাংশ জমিতে এ আলুর চাষ করেছেন তিনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করে মাচা আকারে করা প্রায় ৫ হাজার গাছে ফলন আসা শুরু হয়েছে। ভালোভাবে যতœ নিলে প্রতিটি গাছ থেকে কমপক্ষে ৫/৬ কেজি আলু পাওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি। দামও মোটামুটি ভালো। হুমায়ুনের চাষাবাদ দেখাদেখিতে এলাকার অনেকেই এখন গাছ আলু চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। কৃষক হুমায়ুনের বেল আলু চাষের প্রদর্শনী প্লটে আগত গোয়ালন্দ কৃষি অফিসের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মো. ইমরান হোসেন জানান, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এখন এ উপজেলার অনেক জায়গাই এ বেল আলুর চাষ হচ্ছে। বাজারে সচারাচর যেসব আলু থাকে সেসব আলুর পাশাপাশি স্বাদেও অনেক ভালো এ গাছ আলু। আশা করছি গাছ আলু চাষে লাভবান হবে এ উপজেলার কৃষকরা। এসময় গাছ আলু প্রদর্শনি প্লট পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন।
কৃষি উদ্যোক্তা হুমায়ুন আহমেদ জানান, গত বছর পারিবারিক চাহিদা মেটানো ও শখের বসে গাছ আলুর বেল আলু জাতের গাছের বীজ এনে চাষ করেছিলাম। পরিবারের চাহিদা মেটানোর পরেও বাজারে আলু বিক্রি করেছি। কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় এবছর গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভাবে গাছ আলু চাষের সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষে ৫০ শতক জমিতে বীজ বপন করেছি। প্রায় ৫০ হাজার চারা গাছ মাচায় উঠে ফলন দেয়া শুরু করেছে। কয়েকদিন পরেই আলু বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খোকনুজজ্জামান বলেন, আধুনিক কৃষি কাজে কৃষক হুমায়ুন এ উপজেলায় সেরা। ইতিমধ্যে কৃষিতে সে, সেরা কৃষকের পুরস্কার পেয়েছে। কন্দাল ফসলের মধ্যে গাছ আলুর বেল জাতের আলু অনেক ভালো। গাছের ভালো যতœ নিতে পারলে একটি গাছ থেকে কমপক্ষে ৫/৭ কেজি আলু পাওয়া সম্ভব। সব কিছুতেই এখন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করলে অল্প খরচেই লাভবান হওয়া সম্ভব। উপজেলার যে কেউ আধুনিক চাষাবাদ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে উপজেলা কৃষি অফিস সবসময় তাদের পাশে থাকবে। তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় আমরা উচ্চমূল্যের ফসল সম্প্রসারণের কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়ালন্দে বাণিজ্যিকভাবে গাছ আলু চাষ করে কৃষকদের সফল হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে এই আলু অনেকেই চাষ করছেন।