শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন

ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে জাসমা এখন স্বাবলম্বী

মো. সাজ্জাদ হোসেন, গোয়ালন্দ ॥
  • Update Time : রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪
  • ২০০ Time View

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৩ কেজি কেঁচো দিয়ে জৈব সার অর্থাৎ ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করে এলাকা জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন জাসমা নামের এক গৃহিনী। জৈব সার প্রস্তুত করে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার নবু ওছিমদ্দিন পাড়া গ্রামের গৃহবধূ জাসমা আক্তার আজ স্বাবলম্বী। কম খরচে ভালো ফলনে জৈব সারের বিকল্প আর কিছুই নেই বলে অনেক কৃষক জাসমার কাছ থেকে জৈবসার নিয়ে চাষাবাদ করছেন।

জানা যায়, কৃষি উদ্যোক্তা জাসমা আক্তার ফরিদপুরে তার এক বান্ধবীর দেখাদেখিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার কাছ থেকে ২০২২ সালে ৩ কেজি কেঁচো দিয়ে শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির কাজ। প্রথম প্রথম মাসে ১০-১২ কেজি জৈবসার প্রস্তুত করতেন তিনি। এলাকার মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন গোবর। তা থেকে প্রথমে চাকের মধ্যে কম্পোস্ট সার তৈরি করতেন তিনি। তখন প্রতিমাসে পেতেন ১০ থেকে ১২ কেজি জৈব সার। এখন জৈব সারের খামার করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এলাকা জুড়ে। কেঁচো ও গোবর থেকে জৈব সার তৈরি করে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন প্রতি মাসে ৮-৯ মণ জৈবসার তৈরি করেন তিনি। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে শ্রেষ্ঠ কৃষি উদ্যোক্তার পুরস্কারও পেয়েছেন এই জাসমা আক্তার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করছে তার খামারে। কথা হয় কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিকের সাথে। তারা বলেন, জাসমা প্রথমে তিন কেজি কেঁচো দিয়ে নিজেই চাকের মধ্যে তৈরি করতেন জৈব সার। এখন খামার করেছেন। নিজের আয়ের পাশাপাশি এলাকার অনেকেই এখানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। শুরুতে জৈব সার হতো ১০ থেকে ১২ কেজি। আর এখন প্রতিমাসে তার খামারে জৈবসার তৈরি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ মন। এলাকার চাহিদার পাশাপাশি বাইরে বিক্রি হচ্ছে তার খামারের জৈব সার।

জাসমা আক্তার জানান, ফরিদপুর আমার এক বান্ধবীর খামার দেখে তিনি উৎসাহী হন। তার বান্ধবীর কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে ৩ কেজি কেঁচো এনে সিমেন্টের তৈরি চাকের মধ্যে এলাকার মানুষের কাছ থেকে গোবর এনে কপোস্ট সার তৈরি করি। ফলাফল ভালো হওয়ায় গোয়ালন্দ কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে খামার বৃদ্ধি করতে থাকি। একসময় খামার থেকে জৈব সার পেতাম ১০ থেকে ১২ কেজি। এখন প্রতি মাসে আমার খামারে ৮ থেকে ১২ মন জৈব সার হয়। জৈব সার তৈরি করে উপজেলা হতে শ্রেষ্ঠ কৃষি উদ্দ্যেক্তার পুরস্কারও পেয়েছি। এখন এলাকার কৃষকের চাহিদা পূরণ করার পরেও অতিরিক্ত সার বিক্রির জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার আমাকে সহযোগিতা করে থাকেন। ইতিমধ্যে কৃষি অফিস থেকে খামার বৃদ্ধির জন্য টিন, ইট ও জৈব সার ছাকনির জন্য সরকারিভাবে আমাকে অনুদান দিয়েছেন একটি ছাকনি যন্ত্র। তবে এ অনুদান আমার খামার অনুযায়ী খুবই কম। নিজের অর্থ দিয়ে খামার পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছি। সরকার যদি আমাকে আরও অনুদান বা সহযোগিতা করেন তাহলে ভালোভাবে খামারটি পরিচালনা করতে পারবো। পাশাপাশি আশেপাশের অনেক মানুষের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকনুজ্জামান বলেন, জাসমার খামার ইতিমধ্যে আমরা অনেকবার পরিদর্শন করেছি। খামারের জৈব সারের গুণগত মানও অনেক ভালো। ইতিমধ্যে আমরা তাকে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিচ্ছি। তার খামার বৃদ্ধির জন্য সরকারিভাবে অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস এমন উদ্দ্যেক্তাদের পাশে সবসময়ই থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com