চাকরি জাতীয়করণের কাজে টাকা চেয়ে নোটিশ জারি করে ব্যাপকভাবে সমালোচিত ও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী সরদারকে জামালপুরে বদলি করা হয়েছে। বিদায়কালে সিনিয়রকে বাদ দিয়ে একজন জুনিয়র প্রভাষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে গুঞ্জন চলছে। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, সচেতন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করে কলেজ থেকে অবমুক্ত হন।
জানা গেছে , ২০১৮ সালের ৮ আগষ্ট কলেজটি সরকারি করণের ঘোষণা আসে। এরপর কলেজের একটি পক্ষ জাতীয়করণের কাজে খরচের জন্য টোকেন মানি আদায়ে সাধারণ শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ গত ২০ জুন কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী সরদার নোটিশ জারি করে আরও পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করেন। কিন্তু বিষয়টি কলেজের বাইরে প্রকাশ হয়ে গেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। এদিকে গত ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সরকারি কলেজ-২ উপসচিব চৌধুরী সামিয়া রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী সরদারকে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে রসায়ন এর অধ্যাপক হিসেবে বদলি করা হয়। সেইসাথে ১ আগষ্টের মধ্যে বিধিমালা অনুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তর করে অবমুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী কলেজে উপাধ্যক্ষ না থাকলে সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হবেন। সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজে উপাধ্যক্ষ পদটি শূন্য রয়েছে। সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন দুজন। আমিরুল ইসলাম লিন্টু ও নুরুল ইসলাম। দুজনের মধ্যে আমিরুল ইসলাম জেষ্ঠ্য। তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব না দিয়ে দেয়া হয়েছে ৯ম গ্রেডের প্রভাষক শামসুন্নাহার সিদ্দীকা জলিকে। সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগে সুস্পষ্টভাবে বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। কাজটি সঠিক হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, ইতিপূর্বে কলেজে নির্বাচন ছাড়াই শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয় শামসুন্নাহার সিদ্দীকা জলিকে। এবার নিয়ম ভেঙে তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হলো। এতে তারা ক্ষুদ্ধ।
এ ব্যাপারে কথা বলতে সাবেক অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী সরদার এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুন্নাহার সিদ্দীকা জলি’র মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি।
গোয়ালন্দ উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এখানে বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। অধ্যক্ষ তার পছন্দের একজনকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে গেছেন। এ বিষয়ে মাউশি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।