রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে চৌধুরী আব্দুল হামিদ একাডেমির ম্যানেজিং কমিটি গঠনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির দাতা সদস্য ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ মোল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) চৌধুরীর ছেলে। ২০২১ সালে জিএম চৌধুরীর মৃত্যুর পর স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীকে সভাপতি এবং ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরীকে দাতা সদস্য করে স্কুলের নতুন ম্যনেজিং কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৭ জুলাই দেয়া অভিযোগে ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী জানান, মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন গত ২ জুলাই তিনি তার মনোনয়ন পত্রটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামের কাছে জমা দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার মনোনয়ন পত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট সময়মতো জমা দেননি। একমাত্র দাতা সদস্য হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের মনোনয়নটি শিক্ষা অফিসে জমা দেন।
ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী আরো জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির কোন সভা কিংবা আলাপ-আলোচনা ছাড়াই গোপনে নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এভাবে তিনি বর্তমান কমিটির অধিকাংশ অভিভাবক সদস্যকে বাদ দেয়ার অপকৌশল গ্রহণ করেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং আমজাদ হোসেনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করে তার (ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী) মনোনয়ন পত্রটি গ্রহণের দাবি জানাই।
চৌধুরী আব্দুল হামিদ একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “ফিদাহ্-ই আলী চৌধুরী ঢাকায় থাকেন। আমি তাকে সময় মতো মনোনয়ন জমা দেয়ার বিষয়ে মোবাইল ফোনে অবগত করি। কিন্তু তিনি তার মনোনয়ন পত্র আমার কাছে জমাই দেননি।”
গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ মোল্লা জানান, তিনি বরাট ক্লাব হাউজের বর্তমান আহবায়ক কমিটির আহবায়ক। আমজাদ চেয়ারম্যান স্কুলের দাতা সদস্য পদ লাভের জন্য সম্প্রতি তাকে পাশ কাটিয়ে বরাট ক্লাব হাউজের একটি স্বঘোষিত অবৈধ কমিটি গঠণ করেন। আমি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ৮ জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন দাবি করেন, তিনি বরাট ক্লাব হাউজের সাবেক সভাপতি। ক্লাবের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা সামাদ মোল্লা দীর্ঘদিনেও কার্যকর কমিটি গঠন করতে পারেননি। তিনি পুনরায় সভাপতি হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে ক্লাবটিকে চাঙ্গা করেন। স্কুলের দাতা সদস্য হওয়া তার উদ্দেশ্য নয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র দৈনিক আমাদের রাজবাড়ীকে জানান, বরাট ক্লাব হাউজের কমিটি গঠন এবং চৌধুরী আব্দুল হামিদ একাডেমির ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য নির্বাচন নিয়ে তার কাছে পৃথক দুটি অভিযোগ এসেছে। স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনা এবং প্রাপ্ত অভিযোগের আলোকে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে কথা বলে তিনি দ্রুতই একটি সমাধান করবেন।