রান্নার মসলার মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে ঘুমে অচেতন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় চোর চক্রের চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ। রোববার রাতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার কানাইপুর ইউনিয়নের উলোকান্দা গ্রামের কামাল শেখ (৪৫), একই ইউনিয়নের ভাটি কানাইপুর রুবেল মন্ডল (৩৫), রাজবাড়ী সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের অনিক ওরফে বিল্লাল মুন্সী (২৭) ও ফরিদপুরেট কোতোয়ালি থানার গোপালপুর ইউনিয়নের রসুলপুর লালন মল্লিক (৪৮)।
সদর থানা সূত্র জানায়, গত ৭ জুন রাত ৮টা থেকে ৮ জুন সকাল ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় অজ্ঞাতনামা চোরেরা রাজবাড়ী সদর থানার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের আমরিুল ইসলামের বাড়ির সকলকে খাবারের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে ঘুমে অচেতন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, এ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু আসামি রাজবাড়ী রেলস্টেশনে অবস্থান করছে। এমন সংবাদ প্রাপ্তিতে রাজবাড়ী সদর থানার একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে গত ১৩ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে আসামি কামাল শেখ ও রুবেলকে আটক করে। এ সময় কামাল শেখের ভাড়া ঘরে তল্লাশি করে দুইটি লোহার রড, একটি লোহার প্লাস এবং একটি সেলাইরেঞ্চ উদ্ধার করে। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমতে একই থানার চরলক্ষীপুর এলাকায় অভিযান করে অনিক ওরফে বিল্লাল মুন্সী আটক করা হয়। এ সময় তার ভাড়া ঘর তল্লাশি করে চেতনানাশক ওষুধ নরটন, ডিসোপ্যান-২, পেইস-২, লেপটিক-২, ছোট বড় প্লাস্টিকের কৌটার মধ্যে চেতনানাশক ওষুধের গুঁড়া এছাড়া পলিথিনের মধ্যে হলুদ রঙের চেতনানাশক ওষুধের গুঁড়া উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যমতে, রাজবাড়ী থানার আলাদিপুর এলাকায় অভিযান করে লালন মল্লিককে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা জানিয়েছে, তারা দিনে ও রাতে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করত। গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ির রান্নাঘর বাইরে উঠানে হয়ে থাকে। চোর চক্রটি দিনে অথবা রাতের যেকোনো সময় সুযোগ বুঝে রান্নাঘরে ঢুকে মসলার সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে রাখতো। এই চক্রটি রাজবাড়ী সদর থানা এলাকাসহ রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলায় চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে সংঘবদ্ধভাবে চুরি, ডাকাতি এবং গরু চুরি করে আসছে বলে স্বীকার করেছে। চক্রে জড়িত অন্যান্য আসামি গ্রেপ্তারেও রাজবাড়ী থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে।