রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে অ্যমেরিকায় পাঠানোর নামে অসহায় মানুষের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে। তার নাম হুমায়ুন কবির। বাড়ি নড়াইল জেলায়। বাবার নাম মৃত শামসুল হক খান।
রাজবাড়ীর ডিবি ওসি মো. মনিরুজ্জামান খান জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর এলাকা থেকে খাঁন হুমায়ুন কবির (৪৭)কে প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ভূয়া জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ বিভিন্ন ভূয়া ডকুমেন্ট সহ আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি করত। ২০১০ সালে তার চাকুরি চলে যায়। চাকুরি চলে যাওয়ার পরে সে আর বাড়ীতে যায় নাই। বাড়ীতে তার স্ত্রী সন্তান রহিয়াছে। সে ঢাকায় গিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে কৌশলে তার জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ বিভিন্ন ভূয়া ডকুমেন্ট তৈরী করে। যেখানে তার নাম মনিরুজ্জামান, পিতার নামের জায়গায় মো. বাহেজ উদ্দিন, মাতা-রোকেয়া বেগম, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা-বাসা-৫৬১, রাস্তা-১৫, সাং-রূপনগর টিনশেড, সেকশন ০৫, থানা-রূপনগর, জেলা-ঢাকা ব্যবহার করেছে। মূলত উল্লেখিত বাসার ঠিকানাটি জনৈক মো. বাহেজ উদ্দিন এর। মো. বাহেজ উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তান সহ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন। মো. বাহেজ উদ্দিন আমেরিকায় থাকায় আসামী তার বাসা দেখাশোনা করত। বাহেজ উদ্দিন এর বাসা দেখাশোনা করাকালীন সময়ে বাহেজ উদ্দিনকে বাবা এবং তার স্ত্রীকে মা বানিয়ে উল্লেখিত ঠিকানা ব্যবহার করে এ সকল ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে। তার প্রকৃত নাম-ঠিকানা গোপন রেখে বাহেজ উদ্দিন এর ঠিকানা ব্যবহার করে তার রূপনগরে থাকা কালীন সময়ে এবং পরবর্তীতে রাজবাড়ী জেলার বানীবহ এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়ে জাল জাতীয় পরিচয় পত্র এবং মিথ্যা জন্ম সনদ সহ বিভিন্ন দলিল পত্র তৈরি করে গ্রামের বিভিন্ন সহজ সরল মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের কাছ থেকে প্রতারণা মূলক ভাবে আমেরিকা পাঠানোর কথা বলে নগদ তের লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। বাণীবহ এলাকার আলী হোসেন তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। এ মামলায় জামিনে এসে ভুক্তভোগীদের নামে একের পর এক মামলা করতে থাকে। মিথ্যা নাম ঠিকানা দিয়ে রাজবাড়ী আদালতে এরকম এগারটি মামলা করে। শুধু তাই নয় তার প্রথম স্ত্রীকে তালাকপ্রাপ্ত দেখিয়ে বাণীবহ এলাকায় একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত নন বলে জানা যায়। বিয়ের কাবিন নামায় মিথ্যা নাম ঠিকানা ব্যবহার করে। তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম সনদে জন্ম তারিখ আলাদা আলাদা। তাকে রাজবাড়ীর আদালতে চালান করা হয়েছে।