দু দিন পরেই ঈদুল ফিতর। এই উপলক্ষে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের পাশাপাশি ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। পুরোদমে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ছুটে চলা পুরোদমে টের পাচ্ছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ। কর্মস্থল ছেড়ে নাড়ির টানে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন সবাই। শনিবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি লঞ্চ ও ফেরি গুলোতে যাত্রীদের চাপ ছিলো চোখে পড়ার মতো।
তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় ফেরির চেয়ে লঞ্চে যাত্রীর চাপ ছিলো বেশি। তবে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল ছিলো স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি৷ ঘরমুখো মানুষেরা ফেরি ও লঞ্চ থেকে নেমে রিকশা, ইজিবাইক ও হেঁটে বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছে। সেখান থেকে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বাস, মাইক্রোবাস, মাহেন্দ্রো ও মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা।
অতিরিক্ত ভাড়া না আদায়ের জন্য সচেতনতামূলক মাইকিং ও ব্যানার দেখা গেলেও প্রশাসনের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি ওইসব এলাকায়। শনিবার দৌলতদিয়া ঘাট ও টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, বাস টার্মিনালে অস্থায়ীভাবে গরে উঠেছে বিভিন্ন কাউন্টার। দূরপাল্লার বিভিন্ন জেলার অস্থায়ী কাউন্টার থেকে নেয়া হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া। আলাদা কোন কাউন্টার না থাকায় যাত্রীরা বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া দিয়ে টিকেট কাটছেন।
অন্যান্য সময়ে দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া ৫০ টাকা। কিন্তু এখন যাত্রীদের থেকে নেওয়া হচ্ছে ১শ থেকে ২শ টাকা। পাংশার ৮০ থেকে ৯০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দেড় থেকে ৩শ টাকা। কুষ্টিয়ার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে আড়াই থেকে ৪শ টাকা। ফরিদপুরের ৭০ থেকে ৮০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১শ থেকে ২ শ টাকা। এছাড়া অন্যান্য দূরপাল্লার রুটেও দুই থেকে তিনগুণ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
ঘাট পাড় হয়ে বিভিন্ন রুটে যাওয়া যাত্রী হাসান, সৌরভ, সিয়ামসহ অনেকে বলেন, মীরপুর, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা বাড়তি ভাড়া দিয়ে এসেছেন। কিন্তু দৌলতদিয়ায় এসে সেই ভাড়া যেন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ভাড়া ৫০ টাকা ছিলো, সেই ভাড়া এখন ১ থেকে দেড়শ টাকা। স্থানীয়রা এমনভাবে সিন্ডিকেট করে রেখেছে যে, অন্য কোথাও থেকে টিকেট কেটে যাওয়ারও সুযোগ নাই। তাই তারা যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে সেই ভাড়াই দিতে হচ্ছে।
মাহেন্দ্রো ও ইজিবাইকের একাধিক চালকের সাথে কথা বললে তারা জানান, ঈদের সময় তারা একটু বেশি ভাড়া নিয়ে থাকেন। কারন, ঘাটে একটা চক্রকে গাড়ি প্রতি ২শ থেকে ৩ শ টাকা দিতে হয়। তবে যার কাছ থেকে যেমন পাওয়া যায় তেমনই নিচ্ছেন। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান বলেন, ঘাট ও টার্মিনাল এলাকায় তাদের প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সু-নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। তারপরও বিষয়টি তিনি নিজে পর্যালোচনা করবেন বলে জানান